বিশ্বজুড়ে আলোচিত তুরস্কের যে ট্রেন
মানবসভ্যতার ইতিহাসে এশিয়া ও ইউরোপের মানুষের চলাচলের সেতু হিসেবে কাজ করেছে তুরস্ক। দেশটির সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। তেমনি বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত হয়েছে তুরস্কের একটি ট্রেন। যে ট্রেনে চড়ে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে আর্মেনিয়ার সীমান্ত শহরে যাওয়া যায়।
দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে এক সময় কেউ এই ট্রেনে চড়ার কথা ভাবতেন না।কিন্তু ট্রেন যাত্রায় চমৎকার সব প্রাকৃতিক দৃশ্যের বিবরণ যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে থাকে তখন তুরস্কের মানুষ তো বটেই বিদেশি পর্যটকরা এই ট্রেন ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করছেন। আসুন দেখে নেই তুরস্কের এই ট্রেন ভ্রমন কেমন।
১. ২৪ ঘণ্টার যাত্রা
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে প্রতিদিন যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি সাড়ে ২৪ ঘণ্টা পর আর্মেনিয়া সীমান্তের কাছে অবস্থিত তুর্কি শহর কার্স-এ পৌঁছে। পথের দূরত্ব ১ হাজার ৩৬৫ কিলোমিটার।
২. জনপ্রিয় ছিল না
আঙ্কারা থেকে কার্স-এ বিমানে যেতে এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় লাগে। তাই ট্রেনে করে অনেক সময় খরচ করে এই পথ যাওয়ার বিষয়টিকে আগে পাগলামি মনে করা হত। যদিও টিকিটের দাম খুবই কম, মাত্র ১১ ডলার।
৩. এখন টিকিট পাওয়া দায়!
পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া শুরু করে বছর কয়েক আগে। সেই সময় একদল তরুণ তুর্কি সময়ের চিন্তা না করে স্লিপিং কোচের টিকিট কেটে ওই ট্রেনে ভ্রমণ করা শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে তাঁরা যাত্রাপথের বিভিন্ন ছবি, অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছিল। আর এতেই ট্রেনটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
৪. চল্লিশ শতাংশ বেশি!
হিসেব বলছে, গতবছর প্রায় তিন লক্ষ যাত্রী এই ট্রেনে চড়েছেন। আগের বছরের তুলনায় সেটি প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। এখন যেদিন টিকিট বিক্রি শুরু হয় সেদিনই তা ফুরিয়ে যায়। যদিও পাঁচ বগির জায়গায় এখন ট্রেনে বগির সংখ্যা ১১।
৫. ‘দারুণ অভিজ্ঞতা’
৩৭ বছরের মেডিকেল টেকনিশিয়ান বুরচু ইলমাজ জানান, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া ছবি দেখে তিনি এই ট্রেন ভ্রমণে আগ্রহী হন৷ তবে টিকিট পেতে তাঁকে খুব বেগ পেতে হয়েছিল৷ ‘‘দারুণ নস্টালজিক অভিজ্ঞতা৷ নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, চলতি পথে কামরায় বসে পার্টি করা – এ সব আর অন্য কোনো ধরণের যাত্রায় সম্ভব নয়,’’ বলেন তিনি৷
৬. সামাজিক মাধ্যম ছবি দেয়ার রীতি
যেহেতু সামাজিক মাধ্যম দিয়েই এই ট্রেনের ব্যাপক পরিচিতি, তাই পর্যটকদের জন্য সামাজিক মাধ্যমে এই ট্রেন যাত্রার ছবি, ভিডিও পোস্ট করার বিষয়টি অলিখিত এক রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ট্রেনের কামরায় রুটের দিকে আঙুল নির্দেশ করে তোলা ছবি, মোমবাতি, বেলুন দিয়ে সাজানো কামরা, পার্টি করা, ছোট স্টেশনে নেমে নাচের ভিডিও – এমন সব কন্টেন্টের দেখা পাওয়া যাবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
৭. প্রাকৃতিক দৃশ্য
‘ইস্টার্ন এক্সপ্রেস’-এর দীর্ঘ যাত্রাপথে কৃষিজমি ছাড়াও দেখতে পাওয়া যাবে পাহাড়, বন আর নদী। আর পাড়ি দিতে হবে পাহাড় কেটে তৈরি করা দীর্ঘ সুড়ঙ্গ।
৮. বিয়ের প্রস্তাব
এমেরি আর মাইন নূরের পরিচয় ভ্রমণ পথে। বছর দুই প্রেম করার পর এই ট্রেনের কামরা যাত্রা সময় এমেরি বান্ধবী নূরকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ‘‘আমরা ঘুরতে পছন্দ করি। ফলে ট্রেনযাত্রার বিষয়টি আমাদের সঙ্গে দারুণ মিলে যাচ্ছে। সারা জীবনের যাত্রার এটি একটি ছোট ডেমো,’’ বলেন এমেরি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন