ফেসবুকে ব্যস্ত ডাক্তার, ছটফট করে মারা গেল শিশুটি
ফেসবুকে ব্যস্ত ডাক্তার- রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফেসবুক আর গল্পে ব্যস্ত থাকায় নারী চিকিৎসক মনিজা শিশুটিকে চিকিৎসা না দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি স্বজনদের।
হাসপাতালে মৃত শিশুর নাম আলিম শেখ। সে সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের মামুন শেখের ছেলে এবং আলাদীপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ছিলেন মনিজা। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোলনা উল্টে বুকে আঘাত পায় আলিম। তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও আলিমের স্বজনরা। হাসপাতালে এনে ভর্তির এক ঘণ্টা পর্যন্ত ডাকাডাকি করেও কোনো চিকিৎসকের দেখা পাননি তারা। অবশেষে মারা যায় আলিম।
আলিমের স্বজনরা জানান, আহত আলিমকে হাসপাতালে ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিজা হাসপাতালে বসে ফেসবুক ব্যবহার করছিলেন। পাশাপাশি নার্সদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। বারবার ডাকার পরও শিশুটির কাছে আসেননি চিকিৎসক মনিজা। ফলে এক ঘণ্টা ছটফট করে আলিম মারা যায়।
আলাদীপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহজাদা শেখ বলেন, সকালে বিদ্যালয়ের দোলনায় খেলছিল শিশুরা। এ সময় আলিম পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল। হঠাৎ দোলনা উল্টে আলিমের ওপর পড়ে। এতে আলিম আহত হয়। আমরা তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগে ভর্তির স্লিপ, এক্স-রে ও বিভিন্ন অজুহাতে সময় বিলম্ব করে চিকিৎসক মনিজা। ওই সময় নারী চিকিৎসক মনিজাকে বারবার ডাকলেও শিশুটিকে দেখতে আসেননি। তিনি ফেসবুকে ব্যস্ত ছিলেন। এভাবে এক ঘণ্টা জরুরি বিভাগের বেডে ছটফট করে মারা যায় শিশু আলিম। চিকিৎসকের অবহেলার কারণে শিশু আলিম মারা গেছে। চিকিৎসক মনিজার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য নাজমুল হাসান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে গিয়ে জেনেছি চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু আলিম মারা গেছে। যিনি চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন এবং যার কারণে শিশুটি মারা গেছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. আলী আহসান বলেন, ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না। বিষয়টি শুনে হাসপাতালে এসে শিশুটির সব ফাইলপত্র দেখেছি। এক্স-রে পরীক্ষায় দেখা যায় শিশুটির কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে তার পেটের নিচের অংশ ফুলে যায়। এমন রোগীর চিকিৎসা হলো ভেন্টিলেশন। যা আমাদের এখানে নেই।
তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে যদি ভেন্টিলেশন বা আইসিইউ সিস্টেম থাকত তাহলে আজ এমন ঘটনা ঘটত না। রোগীর স্বজনরা ওই সময়ে দায়িত্বরত এক চিকিৎসকের নামে অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। অভিযোগ পেলে ওই নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন