দৃষ্টি এখন খুলনায়
গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল একই দিন। সেভাবেই চলছিল সব। তবে দুই নগরের মধ্যে গাজীপুরে ভোটার সংখ্যা বেশি হওয়া আর রাজধানী লাগোয়া জনপদ হওয়ায় এই নগরের ভোটের দিকেই বেশি নজর ছিল গণমাধ্যম তথা রাজনৈতিক দলগুলোর।
কিন্তু রবিবার উচ্চ আদালতের এক আদেশে গাজীপুরে ভোট স্থগিত হয়ে গেছে। আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল হয়েছে, তবে শুনানি হয়নি। মঙ্গলবার শুনানির অপেক্ষা।
ফলে এখন নজর কেড়ে নিয়েছে দক্ষিণের শহর খুলনা। জাতীয় নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য জনতার কাছ থেকে যে রায় আসবে, সেটি আসবে এই শহর থেকেই।
গাজীপুরে ভোটের স্থগিতাদেশ যদি আপিলে বাতিলও হয়, তাহলে প্রচারের জন্য যে সময় নষ্ট হয়েছে, সেটাও বিবেচনায় আসতে পারে। তাই ১৫ মে কেবল খুলনাতেই ভোট হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আর সেদিন একটি এলাকায় ভোট হলে গণমাধ্যমের দৃষ্টিও কেবল সেখানেই থাকবে। ফলে নির্বাচন কমিশন, সরকার এবং প্রধান দুই দল-সবাই থাকবে জনতার ‘কাঠগড়ায়’।
খুলনায় মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর। দুইজনই হেভিওয়েট প্রার্থী।
তফসিলের পর থেকেই অনানুষ্ঠানিক এবং প্রতীক বরাদ্দের পর ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচার।
দুই প্রধান মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। দুই পক্ষই নিশ্চিত বিজয়ের প্রত্যাশায়।
খালেক খুলনাকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করার অঙ্গীকার করেছেন। বলেছেন, তিনি মেয়র থাকাকালে যেসব কাজ করেছিলেন, এরপরের পাঁচ বছর বিএনপির মেয়র মনিরুজ্জামান মনি কিছুই করতে পারেননি।
খালেকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী এস এম কামাল হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শুধু গাজীপুর বা খুলনা নয়, সারা দেশের মানুষ এখন উন্নয়নের রাজনীতি বিশ্বাস করেন। বিএনপি নেতারা যা খুশি তাই বলে জনগনকে বোকা বানাতে চায়। কিন্তু জনগন তাদের কথায় সাড়া না দিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে প্রস্তুত।’
‘খুলনাবাসী তাদের উন্নয়নের জন্য নৌকা ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করছেন না, যা প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে।’
অন্যদিকে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে প্রচারণা চালাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তার দাবি, প্রশাসন তাদের কর্মীদেরকে হয়রানি করছে।আবার স্থানীয় সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে সরকারের বিরুদ্ধে যেসব বক্তব্য বিএনপি দিয়ে থাকে, সেগুলোও সামনে আনছেন মঞ্জু।
আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিও ১৫ মে বড় জয়ের প্রত্যাশায়। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘খুলনায় ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার শুরু হয়েছে। তবে সরকারি দল এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।’
এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন এবং সিপিবির আরও তিন জন প্রার্থী থাকলেও তারা আলোচনায় নেই।
বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত খুলনা সিটি করপোরেশন হওয়ার পর প্রথম দুটি নির্বাচনে জিতেছিলেন বিএনপিরই প্রার্থী। ২০০৮ সাল তৃতীয় নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে আনেন আওয়ামী লীগের খালেক।
এই নগরীর দৃশ্যমান বেশিরভাগ উন্নয়নই খালেক মেয়র থাকাকালেই হয়েছে। তবে ২০১৩ সালে বিএনপির মনিরুজ্জামান মনির কাছে ৬১ হাজার ভোটে হেরে যান তিনি। মেয়র হিসেবে মনি খুলনার উন্নয়নে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি বলে সমালোচনা আছে। আর এবার প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে বর্তমান মেয়রকে প্রার্থী করেনি বিএনপি।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের একটি অংশ যেমন দলের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিরোধিতা করছিলেন বলে তথ্য আছে ক্ষমতাসীন দলে, তেমনি খুলনায় বিএনপির একটি অংশ দলের প্রার্থী মঞ্জুর বিরোধিতা করছেন প্রকাশ্যেই। এদের কয়েকজন দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী। আর কয়েকজন দলের সমর্থন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
পুরনো সীমানায় ভোট বলে জটিলতার ‘শঙ্কা’ নেই খুলনায়
গাজীপুরে নাটকীয়তায় খুলনাবাসীর মনেও যে আশঙ্কা ঢুকে যায়নি এমন নয়। গণমাধ্যমেই একেবারেই সাধারণ মানুষ বলেছেন, ওই শহরেও কিছু হয় কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা।তবে যদিও খুলনায় পুরনো পৌরসভার সীমানাতেই নির্বাচন হচ্ছে বলে সেখানে সীমানা সংক্রান্ত কোনও জটিলতা নেই। ফলে নির্বাচন স্থগিতের জোরাল আশঙ্কা নেই বলে জানাচ্ছেন নির্বাচনী কর্মকর্তা।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকও বলছেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মতো খুলনায় স্থগিত হওয়া সম্ভব না। কারণ খুলনার পুরোনো পৌরসভা সীমানায় নির্বাচন হচ্ছে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘খুলনা সিটির নির্বাচন বন্ধ বা স্থগিত হওয়ার মতো এ ধরনের কোন কারণ এখনো পর্যন্ত আমাদের দৃষ্টিতে নেই।’
‘কেসিসি (খুলনা সিটি করপোরেশন) নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে সকল প্রস্তুতি রয়েছে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
ঢাবিতে ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বাগেরহাট জেলা
গত ১৩ তারিখ অনুষ্ঠিত ‘গ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতেবিস্তারিত পড়ুন
এমটিসি গ্লোবাল একাডেমিক লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড পেলেন এনইউবিটি খুলনার উপাচার্য
নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি খুলনা-এর উপাচার্য প্রফেসর ড.বিস্তারিত পড়ুন