কমিশন নিচ্ছেন ক্লিনিক থেকে
তালা হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
তালা হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সের চালক আহম্মদ আলী পলাশের বিরুদ্ধে এবার রোগী সাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগে সংবাদ প্রকাশের ভয়ে সুচতুর চালক আহম্মদ গাড়ির ত্রুটি দেখিয়ে হাসপাতালে ফেলে রেখেছে বলে দাবি করেছে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র।
ইতোমধ্যে হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য বিভাগের জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবের সামনে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচীও পালন করেছেন। যার রেশ কাটতে না কাটতেই হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালক আহম্মদ আলীর বিরুদ্ধে বিপদগ্রস্থ রোগী সাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তালার সামগ্রীক স্বাস্থ্য সমালোচনায় রীতিমত নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সূত্র জানায়- তালার পাটকেলঘাটা এলাকার চোমর খালী গ্রামের ইমাদুল সরদারের ছেলে আহম্মদ আলী ২০০৯ সালে তালা হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে যোগদানের পর থেকে অদ্যবধি এমনিভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছেন।
সূত্র জানায়, সরকারি নিয়মানুযায়ী প্রতি কিঃমিঃ ১০ টাকা হারে টাকা নেয়ার কথা থাকলেও চালক সরকারি নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। ভাড়া নিয়ে প্রায়ই তাকে বিপদগ্রস্থ রোগীদের স্বজনদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে দেখা যায়।
অভিযোগে আরো জানা যায়,বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা তালা হাসপাতাল। উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকেও হাসপাতালটিতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ রোগী আসেন এখানে। বিভিন্ন সময় আগত রোগীদের মধ্যে আশংকাজনক অনেককে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা জেলা সদর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। জরুরী ভিত্তিতে ঐসকল রোগীদের অন্যত্র নিতে এ্যাম্বুলেন্স চালক আহম্মদ লুফে নেন সুযোগ। কখনো কখনো রোগীদের সাথে দরকষাকষি করতে দেখা যায় তাকে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীর স্বজনরা কোন কিছু না বুঝেই তার চাহিদা মাফিক অতিরিক্ত ভাড়ার টাকা বুঝে দিয়ে রোগী নিয়ে চলে যান কাঙ্খিত চিকিৎসালয়ে।
এদিকে হাসপাতাল নিয়ে পত্রিকান্তে ব্যাপক সংবাদ প্রকাশের এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধেও সংবাদ প্রকাশিত হতে পারে এমন আশংকায় গত ২৫ জানুয়ারী এ্যাম্বুলেন্সের ত্রুটি দেখিয়ে কতৃপক্ষের নিকট বুঝে দিয়েছেন ঐ ধূর্ত চালক আহম্মদ। এর পর থেকে জরুরী প্রয়োজনে রোগী সাধারণকে অন্যত্র নিতে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘটনার পর তালার ঘোষনগর এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনার পর আক্রান্ত ৩ জনকে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর এলাকাবাসী বাধ্যতামূলক ইঞ্জিন ভ্যানযোগে হাসপাতালে নেয়।
সূত্র আরো জানায়, আহম্মদ আলীর গাড়ি বা এ্যাম্বুলেন্স পড়ে থাকলেও বন্ধ নেই তার অতিরিক্ত ইনকাম। স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের এ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে আগত রোগীদের উঠিয়ে দিয়ে আদায় করছেন কমিশন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চালক এ্যাম্বুলেন্স চালক আহম্মদ আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান-
তার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করছে।
এ ব্যাপারে তালা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ কুদরত-ই-খুদা জানান- বিষয়টি তার জানা নেই।
সংবাদ সম্মেলন : ভারতের বাসিন্দা হিসেবে ৬৫ সালে দেশে আসলেও জমি কিনেছেন ৫৯ সালে
তালায় খরিদা সম্পত্তি আগের তারিখ দেখিয়ে জাল দলিল করে জবরদখলের অভিযোগে তালা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের মৃত কাদের বক্স শেখ’র ছেলে সিরাজ উদ্দীন শেখ।
৩০ জানুয়ারী মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,তিনি ও তার অন্যান্য ভাই-বোনেরা তালা মৌজার সিএস-২৬২ ও এসএ-২৪৫ নং খতিয়ানের ২১২ দাগের ১.১৬ একর ও ২১৩ দাগের ৩৬ শতক মোট ১.৫২ একর জমির মধ্য হতে ১ একর ১৯.৫ শতক জমির খরিদা সূত্রে মালিক। সিএস ও এসএ বুনিয়াদের মালিক জনৈক নূর শেখ,আক্কাজ শেখ,ফুলজান বিবি,কুচি বিবি ও মনিন্দ্র নাথ গুহ’র নিকট থেকে ১৯৬০ সালের ২৮ জুন ৪৪২৯,১৫ জুলাই ৪৯৮৬ নং,১৯৬৩ সালের ৯ নভেম্বর ৩৬১৪ নং,৬৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী ৩০২ নং ও ১৯৮১ সালের ১৮ নভেম্বর ৫৭৯১ নং কোবলা বুনিয়াদে খরিদ পূর্বক ভোগ-দখল করে আসছেন।
এর পর মিস ১৯৮২/৮২-৮৩,মিস ১৯৮৪/৮২-৮৩,মিস ১৯৮৩/৮২-৮৩ নং কেসে নাম জারি পূর্বক খাজনা প্রদান করে আসছেন। উক্ত জমিসহ তার পার্শ্ববর্তী জমি সর্বশেষ হাল জরিপে ডি.পি-৫৫১,৫৪৭ ও ৫৫০ নং খতিয়ানে ২০৪৭ দাগে যথাযথভাবে রেকর্ডপূর্বক ভোগ দখল করে আসছিলেন। উক্ত জমির মধ্য থেকে ১১.৫ শতক জমি সাবেক এক জনপ্রতিনিধির সহায়তায় তালার মৃত আনোয়ার আলী শেখ’র ছেলে কথিত সাংবাদিক জলিল আহম্মেদ জোরপূর্বক দখল করে নেয়। পরে জলিল তার পিতার আনোয়ার শেখ’র নামে ১৯৫৯ সালের ৯ মে তারিখের ২৬৯২ নং একটি ভূয়া জাল দলিল সৃষ্টি করে ৩০ ধারায় সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মোঃ সেলিমকে প্রভাবিত করে ৮ শতক জমি রেকর্ড করিয়ে নেয়। এর পর তিনি ৩১ ধারায় এর প্রেক্ষিতে ৪০৭০৫/১৭ নং একটি আপীল কেস করেন। যা বিচারাধীন রয়েছে।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন,জলিলের পিতা ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব চলাকালে এদেশের তালা সদরের সরকারি সম্পত্তির উপর একটি খুপড়ি বেধে বসবাস করতেন। অথচ জাল দলিলের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৯৫৯ সাল স্থানীয় চেয়ারম্যানের দেয়া প্রত্যয়ন মতে তিনি তখন এদেশেই আসেননি। প্রসঙ্গত,উক্ত তঞ্চকতামূলক দলিলে দাতা দেখানো হয়েছে আক্কাজ শেখ ও নবু শেখ। মজার ব্যাপার হল,১৯৫৯ সালের ৯ মে ২৬৯২ নং দলিলটি করে দিয়েছিলেন,মোবারকপুর গ্রামের সন্তোষ হরির ছেলে শ্রী রবীন্দ্র নাথ হরিকে। ঐ দলিলে তারা তাকে মোবারকপুর মৌজার ২ নং দাগের ৮০ শতক জমি বিক্রি করেন। এসএ ১৪২ নং খতিয়ানে তা যথাযথভাবে রেকর্ড হয়েছে।
উল্লেখ্য,১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তালার ইসলামকাটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসটি আগুন দিযে পুড়িযে দেয়ায় তার আগের কোন ভলিউম বুক খুঁজে পাওয়া যায়না। এই সুযোগে সুচতুর জলিল উক্ত জাল দলিলটি সৃষ্টি করেছে।
লিখিত অভিযোগে আরো জানান যে,ঐদলিলের দাতাদের একজন নবু শেখ’র পৌত্র আজিজুর রহমানের নিকট থেকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ও প্রলুব্ধ করে জলিল গং মূল দলিলটি নিয়ে তাতে ঘষা-মাজা করে তার পিতা আনোয়ারের নাম অন্তভূক্ত পূর্বক তালা মৌজার ২১২,২১৩ দাগের জমিসহ ১০.৫ শতক জমি ভূমি করিয়েছে। তাছাড়া মূল দলিলের লেখক ছিলেন হরি পদ হরি পক্ষান্তরে জাল দলিলের লেখক দেখানো হয়েছে সৈয়দ সূজিবোশ হোসেনকে,আসল দলিলের ৮০ শতক জমির পন ছিল ৮০০ টাকা পক্ষান্তরে জাল দলিলের ১০.৫ শতক জমির পন দেখানো হয়েছে সেই ৮০০ টাকা।
দু’টি দলির সামনাসামনি রেখে তুলনা করলেই যা বেরিয়ে আসবে। সম্মেলনে তিনি আরো জানান,জাল দলিল বুনিয়াদে সেখানে ঘর নির্মাণকালে তার বিরুদ্ধে মাননীয় দেওয়ানী তালা সহকারী জজ আদালতে গৃহভঙ্গ মতে খাস দখলে দেওয়ানী ১১৫/১৫ নং কেস বিচারাধীন রয়েছে। সর্বশেষ ঐ মামলায় শুণাণী অন্তে মাননীয় বিচারক সরেজমিনে দখল, দখলের ধরণ ও সার্বিক বিষয় তদন্তাদেশ দিলে উক্ত জলিল নানাভাবে তা বাঁধাগ্রস্থ করছে বলে সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন