তালায় অনিশ্চয়তার মুখে শালতা নদীর খনন কাজ, বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতা
বহু প্রত্যাশিত শালতা নদী খননে শেষ মূহুর্তে জনপদের সাধারণ মানুষের আশার মাঝে নিরাশা দেখা দিয়েছে।
একাধিক প্যাকেজ প্রকল্পে বাস্তবায়নাধীন খনন কাজে ঠিকাদারদের প্রকল্প সীমানা নিয়ে রশি টানাটানি, মতদ্বন্দ্ব, অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ন থেকে শুরু করে নানা প্রতিকূলতায় গত ৩ মাস ধরে প্রায় আধা কি.মি. এলাকায় খননকাজ বন্ধ রয়েছে।
এতে করে চলতি বর্ষা মৌসুমে বিস্তীর্ণ এলাকার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক এলাকার ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের ও নিম্নাঞ্চলের বসত-বাড়ি তলিয়ে জনদূর্ভোগ চরমে পৌছেছে।
সমস্যা সমাধানে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শতাধিক স্বাক্ষরিত ঐ আবেদনে বলা হয়েছে, উপজেলার ১১নং খলিলনগর এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদের পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম কালভার্টের মুখে সালতার খনন কাজ বন্ধ থাকায় ঐ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে তারা তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে সালতাসহ খুলনার ৫টি নদীর নব্যতা হ্রাস শুরু হয়। এরমধ্যে ভদ্রা ও শালতা খননের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে নদী খননে প্রকল্প জমা দেয়া হয়। পরে সম্ভাব্যতা যাচাই করে সরকার ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে একনেকের বৈঠকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৭৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এর খননকাজ শুরু হয়ে মোট ৩ অর্থ বছরে শেষ করার কথা রয়েছে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে।
প্রকল্পের আওতায় ভদ্রা ও শালতার ৩০ কি:মি: নদী খননে ৯ টি প্যাকেজে ৭ টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়। প্রকল্পে ডুমুরিয়া বাজারের ভদ্রা নদী থেকে শুরু করে ৯ কি:মি: নদী শৈলমারী নদীর সাথে সংযুক্ত করতে হবে। খননে নদীর তলদেশ ৬০ মিটার ও উপরিভাগে ১১০ মিটার।
এর আগে দীর্ঘদিন ধরে তালা প্রেসক্লাব,পানি কমিটি, শালতা বাঁচাও কমিটি ও বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ এর সহযোগীতায় শালতা নদী পুনর্জীবনে নদী অববাহিকার ভুক্তভোগী মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালিত হয়। কর্ম সূচির মধ্যে জনসমাবেশ, মানববন্ধন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, সুন্দরবন উপকূলীয় পাইকগাছ, তালা ও ডুমুরিয়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত শালতা নদীর উপর ভর করে এক সময় বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ হত। শালতা ছিল মৎস্যজীবিদের জীবিকার প্রাণ। সরকারি মানচিত্রে নদীটির প্রস্থ কোথাও ৪৫০ ফুট,কোথাও ৫০০ ফুট আবার কোথাও ৪০০ ফুট দেখানো হয়েছে। ১৮ কিলোমিটার দৈঘর্যরে নদীর ১৬,১৭/১ নং পোল্ডারের একাংশ বুড়িভদ্রার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে এবং অপর অংশ শিবসা নদীতে গিয়ে মিশেছে। মাঝের প্রায় ১৩ কিঃমিঃ একেবারেই মরে গেছে।
এ ব্যাপারে তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু, খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু, পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, ঘের ব্যবসায়ী কোহিনুর ইসলাম তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানান, ব্যাপক দূর্নীতি-অনিয়মের মধ্যে শুরু হওয়া শালতা খননে শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত নানা নাটকীয়তায় ভরা। এক্ষেত্রে পাউবো ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শালতা খনন আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষদের অন্ধকারে রেখে নদী খনন হচ্ছে। যার এক পর্যায়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পাউবোর সাথে যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে খনন কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষকে অনিশ্চি ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাইড ম্যানেজার আবু তালেব মুঠো ফোনে জানান, ঐ জায়গাটার মাটি নরম থাকায় স্কেভেটর মেশিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হওয়ার কারণে খনন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তারা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সরকারের সংশ্লিষ্ঠ উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন