খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বললেন, আমি তো রোগী ছুটিই দেই নাই, গেল কখন?
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অনুমতি ছাড়াই জোর করে অসুস্থ অবস্থায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যক্তিগত জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকরা।
হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হয়। তার চিকিৎসায় গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ জলিলের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা হলেন- অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক (রিউম্যাটলজি), অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক নকুল কুমার দত্ত (অর্থোপেডিক্স) ও সহকারী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় বিএসএমএমইউর কেবিনব্লক থেকে খালেদা জিয়াকে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার চত্বরে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী বুধবার দিন রেখেছেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী তার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে শুনানি পেছানোর আবেদন করলেও তা মঞ্জুর করেননি বিচারক মাহমুদুল কবির। পরে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনায় এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকরা। এ সময় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউর শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও সার্জারি অনুষদের সাবেক ডিন ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জোর করে ছাড়পত্র বানিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা বলেন, ‘প্রফেসর জলিলুর রহমান চৌধুরী যিনি মেডিকেল বোর্ডের প্রধান উনি কোথায়? ডা. বদরুন্নেসা যিনি মেম্বার, উনি কোথায়? যে চিকিৎসক উনার চিকিৎসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন সেই সকল কোনো চিকিৎসক কোনো মেডিকেল সার্টিফিকেট অথবা উনার ডিসচার্জ সামারি, অথবা কেস সামারি কিছুই তৈরি করেন নাই। আতিকুল হক সাহেবকে ক্লাস থেকে বের করে পরিচালক মহোদয় বলেছেন, যে আপনি এটার মধ্যে সই করে দেন। সৈয়দ আতিকুল হক বলেছেন, আমি তো রোগী ছুটিই দেই নাই, রোগী গেল কখন?’
ডা. সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হলে সরকার তাকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো, জরাজীর্ণ, অবসবাসযোগ্য, পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে পাঠায়। গত ৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরের আগে বেগম জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার আইনজীবীদের আইনি লড়াই ও প্রবল জনমতের কাছে নতি স্বীকার করে আদালত বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল তার স্বাস্থ্য বিষয়ে জনগণকে অবহিত করলেও দুদিনের মাথায় তারা তা থেকে বিরত থাকেন। এর ফলে গত এক মাসে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে জনগণ কিছুই জানতে পারেনি।’
ডা. সাইফুল বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটেছে এমন কোনো সংবাদ দেশবাসীকে জানাতে পারেনি। খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার সেই কারাগারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যে কারাগারে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
ডা. সাইফুল অভিযোগ করে বলেন, বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায় যে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দলের প্রধান বর্তমানে দেশে নেই। সবার পর্যবেক্ষণেও অন্যান্য চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতাল ত্যাগের বিষয়ে কোনো আভাস দেননি। গত কয়েক দিনেও এমন আভাস দেয়া হয়নি। আরো জানা যায় যে, কোনো কোনো চিকিৎসক এই আকস্মিক হাসপাতাল ত্যাগের বিষয়ে একমত ছিলেন না। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত চিকিৎসক নন এমন একজন কনিষ্ঠ চিকিৎসক যিনি কখনই বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে অবগত ছিলেন না বা তাকে কখনো দেখেননি। তাকে চাপ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ছাড়পত্র নেয়া হয়েছে। কোনো জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক বা অধ্যাপক বেগম খালেদা জিয়াকে সরাসরি বিষয়টি অবগত করেনি বা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাননি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন