আরো খবর....
কেশবপুরে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে আ.লীগ নেতাকে এক বছর জেল
যশোরের কেশবপুরে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফকে এক বছর কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পুলিশ শনিবার সকালে তাকে যশোর আদালতে সোপর্দ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে যানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কড়িয়াখালী গ্রামের সাগর মোল্যার মেয়ে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী (৯) কড়িয়াখালি বাজারে আসে ছাতা কিনতে। তার পিতার কাছ থেকে ছাতা কিনে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের রজব গাজীর ছেলে ১ নম্বর বেগমপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ গাজী (৪৭) ওই ছাত্রীকে ডেকে প্রলোভন দেখিয়ে পাশের একটি দোকানের পিছনে নিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালায়। মেয়েটি বাড়িতে ফিরে এ কথা তার মা-বাবাকে জানায়। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ইউনিয়নের মেম্বার কামরুজ্জামান টিটো স্থানীয়ভাবে সালিসের আয়োজন করে। এ সময় মেয়েটি সালিসে উপস্থিত সকলের সামনে ঘটনাটি ফাস করে দেয়। এ ঘটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানতে পেরে কেশবপুর থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ওই রাতেই আব্দুল লতিফ গাজীকে আটক করে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানূর রহমান ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে তাকে এক বছরের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, দন্ডপ্রাপ্ত আব্দুল লতিফ গাজী ৬ মাস আগেও একই গ্রামের আলী মোড়লের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী ঘটায়। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) মো. শাহাজাহান আহমেদ বলেন, শুক্রবার রাতেই লতিফ গাজীকে আটক করি। ভ্রাম্যমান আদালত তাকে এক বছরের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন। শনিবার সকালে তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খাদ্য গুদামে জায়গা সংকটে ধান-চাল ক্রয় বন্ধ
যশোরের কেশবপুর খাদ্য গুদামে জায়গার অভাবে সরকারিভাবে ধান চাল ক্রয়াভিযান প্রায় ১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। দেরিতে বরাদ্দপত্র আসাসহ সময়মত কৃষি অফিস কৃষকের তালিকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দাবি অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
জানা গেছে, গত বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় কেশবপুর উপজেলায় রেকর্ড পরিমান (১৬ হাজার হেক্টর) জমিতে বোরো আবাদ হয়। যা থেকে প্রায় ১ লাখ মোট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। এ ধান উৎপাদন করতে কৃষকের মন প্রতি ৮‘শ থেকে ৯‘শ টাকা খরচ হয়। এ সময় সরকার ধানের মূল্য ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে খোলা বাজারে প্রতিমন ধান ৬‘শ থেকে ৬‘শ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে থাকে। কৃষকের ঘরে দুয়ারে আসার সাথে সাথেই পাওনাদার থেকে শুরু করে মহাজনদের হালখাতার রঙিন খামও এসে দুয়ারে হাজির হয়। বাধ্য হয়ে পাওনাদারদের দেনা মেটাতে মাঝারি ও ক্ষুদ্র কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত ধান বাজারে পানির দরে বিক্রি করে দেয়ার ফলে ঘর শূন্য হয়ে যায়। এ সময় এ উপজেলায় সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৪৯৯ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দপত্র আসলে কৃষি বিভাগ ২ হাজার ৪৮৩ জন কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা ধান, চাউল ক্রয় কমিটির কাছে হস্তান্তর করেন। অবশেষে গত ২৩ মে সরকারিভাবে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ উপজেলায় মোট চাষী পরিবার রয়েছে ৫৭ হাজার ৯২৫টি। এরমধ্যে ভূমিহীন বাদে বড় চাষী রয়েছে ৭৭, মাঝারি চাষী ৪ হাজার ৯‘শ ৯৬, ক্ষুদ্র চাষী ৩০ হাজার ২৪২ ও প্রন্তিক চাষী রয়েছে ১৯ হাজার ৬‘শ ৮৪ জন। এরমধ্যে মাত্র ২ হাজার ৪৮৩ জন কৃষকের নাম তালিকাভূক্ত হলেও বঞ্চিত হয় ৫৫ হাজার ৯২৫ জন কৃষক। তাছাড়া যাদের নাম তালিকাভূক্ত হয়েছে তাদের ১‘শ কেজী থেকে ৫‘শ কেজী করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরফলে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শিকারপুর গ্রামের কৃষক দীলিপ রায় বলেন, তিনি চলতি বোরো মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করে বিক্রির জন্যে ৯০ মন ধান রাখলেও তার নামে ৩‘শ কেজী ধান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাই তিনি ক্ষোভে ধান খাদ্যগুদামে না এনে পানির দরে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে প্রথম দফায় এ উপজেলায় ৪৯৯ মেট্রিক টন ধান ও ১৪০০ মেট্রিক টন চাউল সরকারিভাবে ক্রয় করার বরাদ্দপত্র আসে। দেরিতে বরাদ্দপত্র আসাসহ সময়মত কৃষি অফিস কৃষকের তালিকা দিতে ব্যর্থ হয়। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে বলেই ১০ জুলাই পর্যন্ত ১৬০ মেট্রিক টন ধান ও ৮০০ মেট্রিক টন চাউল ক্রয় করা হয়েছে। কিন্তু গুদামে বর্তমান জায়গা না থাকায় ধান, চাউল ক্রয় অভিযান আপাতত: বন্ধ রয়েছে। আমনের পুরনো চাল এখনও গুদামে রয়ে গেছে। এগুলো সরাতে না পারলে ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানূর রহমান বলেন, খাদ্য গুদামে জায়গা না থাকায় ধান-চাউল ক্রয় অভিযান আপাতত: বন্ধ রয়েছে। গুদাম খালি হলেই কৃষকের কাছ থেকে আবার ধান-চাল ক্রয় করা হবে।
যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক লিয়াকত আলি বলেন, কেশবপুর খাদ্য গুদামের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ২০০০ মেট্রিক টন। এরপরও খাদ্য গুদামে গত ১৫ জুন পর্যন্ত ৫৫ হাজার ৩‘শ ২০ মেট্রিক টন ধান ও ২ হাজার ৫‘শ ১২.৫২৭ মেট্রিক টন চাউল মজুদ রয়েছে। গোডাউন খালি করার জন্যে গত ৯ জুন ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে পত্র দিয়ে জানানো হয়েছে। এরপরও নতুন করে ৮৩১ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দপত্র এসেছে। যার এখনও তালিকাই প্রস্তুত হয়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন