কেশবপুরে আদালতের রায়ের পরেও বসতভিটার দখল পাইনি ভিক্ষুক ছকিনার পরিবার
যশোরের কেশবপুরে আদালতের রায়ের পর নামপত্তনসহ খাজনা পরিশোধ করার পরও দীর্ঘদিনে বসতভিটার দখল বুঝে পাইনি ভিক্ষুক ছকিনা বেগমের পরিবার। প্রতিবেশীদের প্রতারণায় ওই পরিবার বর্তমান উচ্ছেদাতঙ্কে দিনাতিপাত করছে। গত মাঠ জরিপের সময় পরিবারটির বসত ভিটার ৯ শতক জমি প্রতিবেশীরা প্রতারণা করে নিজ নামে হাল রেকর্ড করে নেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার হাবাসপোল গ্রামে ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে পরিবারটির বসবাস। এ রায়ের পর থেকে অর্থ না থাকায় কোথাও তাঁরা ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না বলে গত সোমবার কেশবপুর প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে কেশবপুর পৌর এলাকার হাবাসপোল গ্রামের হানেফ সরদার তাঁর পৈত্রিক হাল ৪৯৯ দাগের ১০ শতক জমি স্ত্রী বিলাত জান বিবির নামে কবলা দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেয়। বিলাত জান বিবির মৃত্যুর পর তার মেয়ে ভিক্ষুক ছকিনা বেগম ছেলে ভ্যানচালক আব্দুল আলীমকে নিয়ে ওই জমির ওপর বসতবাড়ি নির্মাণসহ বসবাস করে আসছেন। এদিকে, ১৯৮৭ সালের মাঠ জরিপের সময় তাঁর পাশের প্রতিবেশীরা প্রতারণা করে ওই জমির ভেতর থেকে ৯ শতক জমি হাল রেকর্ড করে নেয়। এরমধ্যে ইয়াকুব আলী সরদারের নামে ৬ শতক ও তিতু মোড়লের নামে ৩ শতক হাল রেকর্ড হয়। এ ঘটনায় ২০১১ সালে ছকিনা বেগম বাদি হয়ে যশোর বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে একটি মামলা করেন। এ মামলা চলাকালিন সময়ে ইয়াকুব আলী সরদার ও তিতু মোড়ল যখন তখন ওই জমি জবর দখলের হুমকি দিতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে বজলু মোড়ল তার ২ ছেলে রাসেল, সোহেল, ইয়াকুব সরদার, নাজিম সরদার যোগসাজসে ৭ শতক জমি জবর দখল করে নেয়। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০১৭ সালে এ মামলার রায় ছকিনা বেগমের পক্ষে যায়। এ সময় ছকিনা বেগম নামপত্তন, খাজনা পরিশোধ করলেও আজও তারা জমির দখল বুঝে পায়নি।
এদিকে, ১ বছর আগে এ রায়ের কোন তোয়াক্কা না করে ইয়াকুব আলী সরদার ও তিতু মোড়লের ছেলে বজলু মোড়ল ওই জমি দাবি করে ছকিনা বেগমের রান্নাঘর, গোয়ালঘর ও উঠানের শিশুগাছ পর্যন্ত জমি দখল করে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়ে পরিবারটিকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ ঘটনায় ছকিনা বেগম বাদি হয়ে বিজ্ঞ অতিঃ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- পি-৪২৮/১৭। আদালতের নির্দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় পুলিশ ওই জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ মামলার রায়ও ছকিনা বেগমের পক্ষে যায়।
ছকিনা বেগমের ছেলে ভ্যানচালক আব্দুল আলীম অভিযোগ করেন, আদালতের রায় তাদের পক্ষে গেলেও এখনও বজলু মোড়ল প্রভাব খাটিয়ে তার জায়গায় রান্নাঘর বেঁধে জবর দখলে রেখেছেন। বসতবাড়ি রক্ষায় প্রতিবেশীদের একের পর এক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলার ঘানি টানতে গিয়ে বর্তমান আমরা নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আদালতের রায়ের পর নামপত্তন, খাজনা পরিশোধসহ আদালতে সিভিল মামলা করে পর্চা সংশোধন করা হলেও এখনও জমির দখল বুঝে পাইনি। তিনি বিষয়টি নিরসনে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ বজলু মোড়লের ছেলে রাসেল জানায়, তারা পৈত্রিক সূত্রে ওই জমি ভোগ দখল করছেন। প্রিন্ট পর্চায় তাদের নাম আছে। এ ঘটনায় ইউএনও, এসিল্যান্ড ও থানায় ছকিনা বেগম ও তার ছেলে আলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারা হাজির হলেও কোন কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া ছকিনা বেগমের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আপীল করা হয়েছে। যা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
কেশবপুর থানার এএস আই আব্দুস সালাম বলেন, রাসেল মোড়লের অভিযোগের ভিত্তিতে ২ দিন আগে বিষয়টি নিয়ে থানায় বসাবসি হয়েছিল। মিমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু উভয় পক্ষ একমত হতে পারেনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন