পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশে হত্যাকারীদের দৌড়ঝাঁপ
আশাশুনিতে মোনায়েম হত্যাকারীরা ধরাছোয়ার বাইরে!!
আশাশুনিতে মৎস ঘের দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় মোনায়েম হোসেন গাইনকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মূল আসামীরা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে।
গত বুধবার সকালে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বালিয়াপুর বিলে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত মোনায়েম হোসেন গাইন কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের মৃত শাহাজুদ্দীন গাইনের ছেলে। এই ঘটনায় আশাশুনি থানা পুলিশ শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন সানা (৫০), তার ভাই আরশাদ হোসেন সানা (৬৩) ও বাটরা গ্রামের আশু সরদারের ছেলে লিটন সরদার ওরফে বাবু (৪০) কে আটক করে পুলিশ। তবে গত ররিবার জামিনে মুক্তি পেয়েছে আরশাদ হোসেন সানা ও লিটন সরদার ওরফে বাবু।
এ ঘটনায় শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন কে প্রধান আসামি করে মোট ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও ১৮/২০ অজ্ঞতনামাদের আসামী করে মামলা করে।
নিহতের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন (খুকু) জানান, আমার স্বামী মোনায়েম হোসেনের হত্যায় যারা মূল আসামি মামলায় তাদের নাম না থাকায় গ্রেফতার হওয়া আসামিরা ৩ দিনের মধ্যে জামিন পেয়েছে। খুকু আরও বলেন, ঘটনার দিন আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে আমার স্বামির ডাঃ এর কাছে যাওয়ার কথা ছিলো। আর আমরা প্রস্তুতি নিয়ে চাম্পাফুল বাজার পর্যন্তও যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমার স্বামীর সাথে মেম্বর নজরুল ইসলামের সাথে দেখা হলে সে সেখান থেকে আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ওই সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে হত্যা করে। তবে নিজের স্বার্থের কারনে আমাদের পরামর্শ ছাড়াই ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মূল আসামি ভাড়াটিয়া গুন্ডাদের বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো লোকের নাম দিয়ে এ মামলাটি করিয়েছে।
নিহতের ভাই ইউপি সদস্য গোলাম কাইয়ুম গাইন জানান, আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বালিয়াপুর বিলে প্রায় ১৬ বিঘা জমির একটি মাছের ঘের নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ম. মোনায়েম হোসেন সানা ও ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম গাইনের মধ্যে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে বুধবার সকালে ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম গাইনের দখলে থাকা মাছের ঘেরটি চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন সানার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী লিটন সানা, হবি মোল্যাসহ ২০/২৫ জন দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘেরটি দখল নিতে গেলে সে সময় মৎস্য ঘেরে অবস্থানরত মোনায়েমকে একা পেয়ে দা দিয়ে তার মাথার পিছন দিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহতের চাচাতো ভাই ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম গাইন জানান, লিটন সানা, হবি মোল্য, বসুখালি গ্রামের গ্রাম ডাক্তার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক একই গ্রামের নাম না জানা আরও ২/৩ জনসহ আশাশুনি ও কালিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এ হত্যা করেছে।
এদিকে সরেজমিন ঘুরে ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঐ ঘটনার আগের দিন রাতে আশাশুনির বসুখালী গ্রামের আটন (মাছ ধরা খাঁচা) ব্যবসায়ী কাছেম আলী গাজী ও নুরুজ্জামান গাজীর বাড়িতে অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে অবস্থান করেছিলো। রাতে ও পরদিন সকালে তারা বসুখালী গ্রামের সামছুর গাজীর ছেলে নুরুজ্জামান ও ডাক্তার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে কয়েকটি মটর সাইকেলে অস্ত্র নিয়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী কালিগঞ্জের ইন্দ্রনগর গ্রামের মৃত মানিক আলী পাড়ের ছেলে আব্দুর রউফ পাড়, কুরবান পাড়ের ছেলে আব্দুল গফুর পাড়, আব্দুর ছাত্তার পাড়ের ছেলে নূর ইসলাম, জোহর আলী পাড়ের পুত্র শাহিনুর পাড় তার ভাই চান্নু পাড়, মৃত নওশের আলী গাজীর ছেলে সবুর গাজী, রহিম বক্সের ছেলে রহমান পাড়, ফেরাজতুল্লা পাড়ের ছেলে রেজাউল পাড়, সূবর্ণলতা গ্রামের রহমত গাজীর ছেলে ফজর আলী গাজী, তাদর্তোর ছেলে শান্ত, কাজলা গ্রামের এবাদুল গাজীর ছেলে ইসরাইল গাজী, ভাংঙ্গালমারী গ্রামের আনসার আলীর পুত্র মুর্শিদ, কাশিবাটি গ্রামের আরশাফ আলী মীরের ছেলে হাবিব মীর। লতাখালীর উপর দিয়ে কয়েকবার ঘটনাস্থলের দিকে যায়।
উল্লেখ্য, উপরোক্ত একাধিক হত্যা মামলাসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নাম বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর নিজেদেরকে বাঁচাতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। তবে সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় দু’একজন প্রভাবশালী নেতাদের আশ্বাসে হত্যাকারীরা অনেকেই বাড়িতেই অবস্থান করছে। মামলার স্বাক্ষী বসুখালী গ্রামের মুনছুর গাজী জানান, ঘটনার আগের দিন রাতে বালিয়াপুরের হবি ও লিটনসহ পত্রিকায় প্রকাশ হওয়া ব্যক্তিরা নজরুল ইসলাম গাইনের ঘেরে গেলে ঘের মালিকরা তাদেরকে তাড়িযে দেয়। পরদিন সকালে একই ব্যক্তিরা আবার সেখানে যায় এবং তারা মোনায়েম হোসেন কে হত্যা করে। তবে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে এত প্রমান থাকার পর তারা কেনো গ্রেফতার হচ্ছে না?
এ প্রশ্ন সচেতন মহলের। এদিকে, এলাকাবাসী প্রকৃত হত্যাকারীকে সনাক্ত করে দ্রুত বিচারের আওয়াতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
আশাশুনিতে পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অভিযোগ!
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন করে অধিক লাভ ওবিস্তারিত পড়ুন