অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকলেই সিলগালা: গণপূর্তমন্ত্রী
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, ঢাকার যেসব বহুতল ভবন ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে, যেসব ভবনে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই, তা চিহ্নিত করে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে সিলগালা করে দেয়া হবে।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশান-১ এর অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনসিসি মার্কেট পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রোববার (৩১ মার্চ) থেকেই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কাজ শুরু করবে।
মন্ত্রী বলেন, কোনো দুর্ঘটনাই ছোট নয়। মানবসৃষ্ট দুর্ঘটনাকে আমরা নিছক দুর্ঘটনা বলবো না, এটা পুরোপুরি হত্যাকাণ্ড। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর। সুতরাং যারা অনিয়ম করে বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন তৈরি করেছেন, তাদের কোনো ছাড় নয়। এমনকি রাজউকের কেউ জড়িত থাকলেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ডিএনসিসির এ মার্কেটে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সহনীয় নয়। রাজধানীতে যেসব ভবন তৈরি হয়েছে, সেটা একদিনে তৈরি হয়নি। তাই এসব অবৈধ ভবনকে উচ্ছেদ করতে কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু নতুন ঢাকায় আমরা যেসব স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছি, সেখানে রাজউকের পরিকল্পনার বাইরে চুল পরিমাণ যাওয়ার সুযোগ নেই। একেবারে পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। কোথাও অনিয়ম হচ্ছে খবর পেলে সরাসরি আমাকে জানান। আমি সরাসরি ব্যবস্থা নেব। আমরা কাজ করার জন্য দায়িত্ব নিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবো। এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফারুক খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শনিবার ভোর পৌনে ৬টার আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে ধাপে ধাপে আরো কয়েকটি ইউনিট যোগ দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় সাড়ে তিন ঘন্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বাজারটিতে গৃহসামগ্রী, মুদি জিনিসপত্র, সবজির বাজার, কসমেটিক্স দোকান, পারফিউমের দোকানসহ প্রায় ৩ শ’র মতো দোকান ছিল। এসব দোকান মালিকদের দাবি, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এদিকে, গুলশান-১ নম্বরের সড়কে ব্যারিকেড বসিয়ে যান চলাচল বন্ধ রেখেছে পুলিশ। ফলে হাতিরঝিল ও পুলিশ প্লাজা, গুলশান গুদারাঘাট, মহাখালী টিবি গেট ও গুলশান-২ নম্বর থেকে কোনো গাড়ি ঢুকতে পারছে না।এর আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম দোকান মালিক সমিতিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিনির্বাপক না থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধু এই মার্কেট নয়, ঢাকা সিটিতে যতগুলো মার্কেট আছে, সেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ কি না কিংবা সেগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কি না সেটা এখন দেখার সময় এসেছে। না থাকলে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিসিসি মার্কেটে স্থায়ী বহুতল ভবন তৈরির প্রসঙ্গ টেনে মেয়র বলেন, ডিএনসিসির এই মার্কেটটিতে মামলার জটিলতা আছে। এ কারণে এখানে স্থায়ী মার্কেট করা যাচ্ছে না। আমরা দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে স্থায়ী মার্কেটের দিকে যাব, যেখানে অগ্নিনির্বাপণের যাবতীয় ব্যবস্থা থাকবে।
দুই বছর আগে একই মার্কেটে আগুন লেগেছিল। সেবার তদন্ত কমিটিগুলো যেসব সুপারিশ করেছিল, সেগুলো মানা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, এর আগেই মার্কেটে আগুন লেগেছিল। তখন বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার কথা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ী কর্তৃপক্ষ সেই ব্যবস্থা নিয়েছিল কি না, সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখব।
বেলা ১০টার দিকে গুলশান কাঁচাবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ‘এই মার্কেটটি ভেঙে আন্তর্জাতিক মানের শপিং মল করার কথা ছিল। যেকোনো কারণে এটা হয়নি। কিন্তু এখন জনগণের স্বার্থে যেভাবেই হোক এটাকে ভেঙে মার্কেট তৈরি করতে হবে।’তিনি বলেন, ‘কাঁচাবাজারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমার দুই পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তারা আজকেই সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেসব ব্যবসায়ীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের বিষয়ে সিটি করপোরেশন খোঁজ খবর নিচ্ছে।’ তিনি কাঁচা মার্কেটে পুড়ে যাওয়া দোকান মালিকদের সঙ্গে কখা বলেন। তাদের সান্ত্বনা দেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি ভোরবেলা একই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় মার্কেটটির বহু দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। এরপর অস্থায়ীভাবে দোকান তৈরি করে মার্কেটটি চালু করা হয়। ২০১৭ সালে আগুনের ঘটনার পর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি মার্কেট কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ করেন আশপাশের লোকজন। তবে আজ ভোরবেলা আগুন লাগার খবর পেয়ে দুই মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট চলে আসে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ার কারণে রাস্তা ফাঁকা ছিল। তাই দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য ডিএনসিসির সুপার মার্কেট অংশে আগুন ছড়ায়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন