সরকারের দীর্ঘ সময়েই শিক্ষা উন্নয়নের বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনা
শিক্ষা বা জ্ঞানই মানুষের জীবন ধারণ ও উন্নতির জন্যে প্রধানতম সহায়ক বা নিয়ামক। একদা গুহা বাসী আদিম মানব আজ যে বিস্ময়কর সভ্যতার বিকাশ ঘটিয়েছে তার পেছনেই রয়েছে মানুষের যুগ যুগান্তরের অর্জিত জ্ঞান এবং অর্জনের প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ার নামই শিক্ষা। তাই শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বা শিক্ষা জাতির উন্নতির পূর্বশর্ত। মেরুদণ্ড ছাড়া মানুষ কখনোই চলতে পারে না, তেমনি সুশিক্ষিত লোক ছাড়া একটি দেশ চলতে পারে না। জানা দরকার যে, এই বাংলা শিক্ষা শব্দটি এসেছে ’শাস’ ধাতু থেকে। যার অর্থই শাসন করা বা উপদেশ দান করা। আর শিক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘এডুকেশন’, তা এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘এডুকেয়ার’ বা ‘এডুকাতুম’ থেকে। যার অর্থ বের করে আনা অর্থাৎ ভেতরের সম্ভাবনাকেই বাইরে বের করে নিয়ে আসা বা বিকশিত করা। সক্রেটিসের ভাষায়, এ শিক্ষা হল মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের বিকাশ। এরিস্টটলের মতে, সুস্থ দেহে সুস্থ মন তৈরি করাই হল শিক্ষা আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে গেলে, শিক্ষা হল তাই যা আমাদের কেবল তথ্য পরিবেশনই করে না, বিশ্ব সত্তার সাথেই সামঞ্জস্য রেখে আমাদের সুন্দর জীবনকে গড়ে তোলে। সুতরাং, শিক্ষা প্রক্রিয়ায় যে কোন মানুষের অন্তর্নিহিত গুণাবলীর পূর্ণ বিকাশের জন্যেই উৎসাহ দেয়া এবং সমাজে তাকেই একজন উৎপাদনশীল সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভের জন্যেই যে সব দক্ষতা প্রয়োজন সে গুলো অর্জনে অবশ্যই সহায়তা করা। সাধারণ অর্থে যদি বলি, জ্ঞান অথবা দক্ষতা অর্জনই শিক্ষা। ব্যাপক অর্থে এমন শিক্ষাকে পদ্ধতিগত ভাবে জ্ঞান লাভের প্রক্রিয়াটিকেই শিক্ষা বলে। সুতরাং শিক্ষা হল, সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের অব্যাহত অনুশীলন। একটু অন্য ভাবে বলা যায় যে, মস্তিষ্কবিহীন মানুষ এবং শিক্ষাবিহীন জাতি কখনোই উন্নতি করতে পারে না। তাই শিক্ষার দিকে যে দেশ যত বেশি অগ্রগামী, সে দেশটি যেন ততোই উন্নয়ন মাত্রায় বেশি সমৃদ্ধশালী। তাই তো মানুষকে শিক্ষিত রূপে গড়ে তোলার দ্বায়িত্বে যারা নিয়োজিত রয়েছে তারাই হচ্ছে সু-শিক্ষক। কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যক্রমের মধ্যে শিক্ষাকে আর শিক্ষককে কতটুকু মূল্যবান করছে সরকার, সেটিই এ ভাবনার আবশ্যিক বিষয়। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সংজ্ঞাতেই বলতে গেলে বলা যায় যে, একটি কল্যাণ মূলক আধুনিক রাষ্ট্রে যে সব উপাদান থাকা উচিত, তা যদি নিশ্চিত করার প্রয়োজন হয়, তবে শিক্ষাকে প্রথম কাতারেই রাখা কিংবা শিক্ষকদের মর্যাদা সহ আর্থিক উন্নয়ন কিংবা বেতন বৃদ্ধি প্রয়োজন।
উন্নয়নশীল এমন বাংলাদেশের পক্ষে অবশ্যই চেষ্টা করলে শিক্ষক এবং শিক্ষাকে উচ্চ আসনে বসানো সম্ভব, যদি থাকে সরকারের সদিচ্ছা। এ শিক্ষাকেই সারা বিশ্বের দেশগুলো কেমন ভাবে, কতটুকু গুরুত্ব দিয়ে থাকে তারও পরিসংখ্যান জানা দরকার। যদি যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করি, তা হলে দেখা যায় শিক্ষকগণদের ‘ভি,আই,পি’ মর্যাদা প্রদান করে তারা। ফ্রান্স সরকার তাদের আদালতে কেবল মাত্র শিক্ষকেই চেয়ারে বসতে দেন। আর জাপানেও এই শিক্ষকদের তাদের সরকারের বিশেষ অনুমতি ছাড়া কখনো গ্রেফতার করেনা। আবার চীন দেশের শিক্ষা উন্নয়নে সবচেয়ে মর্যাদা পূর্ণ পদই শিক্ষকতা। তাছাড়াও কোরিয়ার দিকে যদি একটি বার দৃষ্টিপাত করি, তাহলে এমন শিক্ষকদের মন্ত্রীদের মতো সমান সুযোগ দেন। সুতরাং বাংলাদেশের শিক্ষকের কেমন অবস্থান কিংবা তাদের শ্রমের মূল্য কেমন প্রদান হয় সেটিই বিশ্লেষণের প্রয়োজন। স্বাধীনতার পর থেকে, এমন রাষ্ট্রে কতটুকুই উন্নত হয়েছে বা তার ভবিষ্যৎ কোন দিকে এগোচ্ছে, তাকে অবশ্যই বোঝা যাবে এ দেশের শিক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রমের ভেতর দিয়ে। এই দেশে, এই সরকার এর আমলে আসলেই সু-শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি পেয়েছে তাকে কোনো ভাবেই যেন অশিকার করবার উপায় দেখছিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন বর্তমানে উন্নয়নশীল এইদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে গভীর মনোযোগী। তাই, বাংলাদেশের শিক্ষা কিংবা শিক্ষকদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বেতন ভাতা বৃদ্ধি করেছে কিন্তু তা এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কমই বলা চলে। তবুও এমন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের ক্ষমতা হাতে নিয়েই যেন শিক্ষা সহ শিক্ষকদের মানমর্যাদার কথা ভাবছে। আগামীতেও এখাতে অনেক স্বয়ং সম্পূর্ণ ভাবে কাজ করবে বলে জানা যায়। শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ইচ্ছা ও উন্নয়নের অবস্থান অনেকাংশেই অগ্রসর। উপলব্ধি ও পরিমাপের বিবেচনায় এখন যদি এ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করি, তা হলেও এখনও বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে রয়েছে। জানা যায় যে ১৯৭১সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান যে লক্ষ্য ছিল-জাতিকে মেধাশূণ্য করে দেয়া, তা অনেকাংশেই যেন সফল হয়েছে। ঐ সকল বুদ্ধিজীবীদের অবর্তমানেই জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা গুলো চলে গিয়েছিল এক অযোগ্য মহলের ব্যক্তির নিকট। তাই বাংলাদেশ যে সূচনালগ্নে একেবারেই বুদ্ধিজীবীশূণ্য অবস্থায় ছিল, তা তো নয়। জাতির জনক ‘বঙ্গবন্ধুর’ আদর্শেই তারা অনুপ্রাণিত হয়ে সু-শিক্ষার আলোকে সে সময়েই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ছিল। তাদের আজ অনেককেই হারাতে হয়েছে। তবুও এ বাংলাদেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকটা এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। প্রকৃত পক্ষে এ দেশের সরকার নানা ভাবেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সে বিবেচনায় প্রতিটি নাগরিকদের শিক্ষা নিশ্চিত সহ শিক্ষকদের কর্মমুখী কর্মে গড়ে তোলার ব্যাপক প্রয়াস চালাচ্ছে।
টেকসই শান্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে শিক্ষাকেই সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে উপজীব্য করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেই নিরাপদ শান্তির জন্য শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে এবং তা আওয়ামীলীগ সরকার করছে। শিক্ষা উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়ায়, নিজের অবস্থান বজায় রাখতে সাহায্য করে কিংবা জীবনকেই সমৃদ্ধ করে। আরও বলা যায় যে, সামাজিক ব্যাধির বেশিরভাগই দূর করে ”সু-শিক্ষা”। এটি কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি করে, আয় ও দারিদ্র্য নিরসনে ভূমিকা রাখে।
জ্ঞান বিজ্ঞানের বিস্ময়কর উন্নতির এইযুগে জাতীয় জীবনে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত নয়, তারা পদে পদে অন্ধকারই দেখে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, একটি পূর্ণাঙ্গ কিংবা দীর্ঘ মেয়াদি শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করে, দেশের সকল জনগোষ্ঠীকেই অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত এই নিরক্ষর জাতিকে আলোকিত করতে হবে। এমন এই শিক্ষা নীতির যথাযথ প্রয়োগ কিংবা বাস্তবায়নের অবকাঠামোগত কাজগুলোকে সম্পন্ন করে আরও খুব স্বযত্নেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলতে হবে। শিক্ষকতা পেশাকে সারা বিশ্বের দেশ গুলোর মতো শিক্ষকদের অবশ্যই পারিশ্রমিক দিয়ে মর্যাদা পূূর্ণ আসনে বসিয়ে এমন শিক্ষকতা পেশাকে গুরুত্ব পূর্ণ করে তুলতে হবে। তাছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্যে শিক্ষা মূলক বিভিন্ন কর্মসূচির পাশা পাশি বহু ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। নতুন প্রজন্মের শিশুরাই পাবে উন্নত কিংবা সমৃদ্ধির বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা বলেন, শিশু-কিশোরদেরই উৎসাহিত করা প্রয়োজন চিত্রাঙ্কন ও বিষয় ভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা এবং খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা সহ অনেক সু-পরিকল্পিত ভাবেই বক্তব্য বা বক্তৃতার অনুশীলন। এই গুলোই ছেলে মেয়েদের “খুব সুন্দর” জীবন গড়ার সুযোগ সৃৃষ্টি করে। তাই শিক্ষার সঙ্গেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করতে সরকার সুপরিকল্পিত ভাবেই দেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছে। আজকের শিশুরা বড় হয়েই এদেশের জন্যে গর্ববোধ করবে।
ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, অতীতে পাবলিক পরীক্ষায় ব্যাপক হারে নকল, দুর্নীতি, প্রশ্ন ফাঁস কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্রে উত্তর বলে দেওয়ার মত কাজ গুলো শক্ত হাতেই এ সরকার বন্ধ করতে চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছু কুচক্রী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রেই যেন এ সরকার বিব্রত হচ্ছে। আসলে বলতেই হয়, সরকার কারিগরি দিক থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি, অবশ্যই সেই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যেন সক্ষম হয়েছে। তাছাড়াও দেশের ‘মাদ্রাসা’ শিক্ষাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাবেই মূল্যায়ন করেছে। আল্লামা শাহ আহমদ শফি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়ে “মাদ্রাসা” শিক্ষা ব্যবস্থা সহ আলেমদেরকে খুবই সম্মানিত করেছে। সরকার বই-পুস্তক থেকে শুরু করেই যেন- অনেক ল্যাপটপ, তথ্য-প্রযুুক্তির ব্যবহার, বৃত্তি প্রদান ও বিনা বেতনেই লেখা পড়ার সুুুযোগ কিংবা যাতায়াতের মাধ্যম সহ ইত্যাদির বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। তাই আধুনিক শিক্ষাকে কার্যকরী সম্পর্কে প্রয়োজন হবে মানবিক গুণাবলী সমৃদ্ধ শিক্ষা পদ্ধতি কিংবা ছাত্র/ছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থায় প্রয়োজন শিক্ষক মহলদের যুুুুগোপযোগী চিন্তাচেতনা এবং তার যথাযথ ব্যবহার সহ একটি আধুনিক সিলেবাস দাঁড় করানো। এতেই শিক্ষার ক্ষেত্রে ন্যায়, সত্য কিংবা অনেক সুন্দর এক উপযোগী শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা সহ নৈতিক শিক্ষা বা মূল্যবোধের চর্চাকে প্রাধান্য দিয়েই অনেক আধুনিক সুশিক্ষিত, সচেতন মানুষের দায়িত্বে থাকা উচিত। এমন রাষ্ট্র কিংবা সমাজের প্রতি সেই দায়িত্ব গুলোকেই চিহ্নিত করে তার যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এই শিক্ষাকে নিয়েই দেখা যায় বহু দুর্নীতি হয়। তাকে প্রশ্রয় না দিয়েই, সেখানে মানুষ গড়ার একটি প্লাটফর্ম সৃষ্টি করতে হবে। পরীক্ষা গ্রহণ করে, যারা যোগ্য ছাত্র-ছাত্রী তাদের মূল্যায়নে এনে অযোগ্যকে মূল্যায়নের নাটক বন্ধ প্রয়োজন। বিশেষত আজকে দেখাই যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ যেই সব পরীক্ষা বাস্তবিক অর্থে তা সামাজিক কাজে ব্যবহার হয় না বললেই চলে। তাই সেখানে কারিগরি কিংবা ব্যবহারিক শিক্ষা পদ্ধতি প্রসার ঘটাতে হবে।
শিক্ষার্থী যাতে ফেল না করে তাকেও শিক্ষকদেরকে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বর্তমানে এই আওয়ামীলীগ সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রসার এবং জনসাধারণকেও শতভাগ সু-শিক্ষার আওতাতেই নিয়ে আসার জন্যে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গবেষণা, বিজ্ঞানের মতো শিক্ষাতেই গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী জানান, উচ্চশিক্ষা প্রসারে বিশেষ ফান্ডও গঠন করা হয়েছে। কারিগরি ও বিজ্ঞানসহ সব ধরনের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে কারিকুলাম পরিবর্তনও করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের ১৫১টা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে ৪৮টা পাবলিক এবং ১০৩টা প্রাইভেট। তার একটাই লক্ষ্য হচ্ছে, যত বড় বড় এলাকা রয়েছে, যেই সব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই, সে সব জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবে এবং যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় নাই, সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় করেও দিচ্ছে। এই সরকারের উদ্দেশ্য একটাই যাতে ছেলেমেয়েরা ঘরে বসে যাতে শিক্ষাটা পায়। জননেত্রী শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় এলেই বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করেই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করবে বলে ঘোষণা দেন। তিনি আরও বলেন, এমন বাংলাদেশে কোনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কখনো ছিলনা। তাঁর লক্ষ্য এইদেশের মানুষ সুলভে সুচিকিৎসা পাবে ও তাদের সন্তান সেখানেই পড়াশোনা করে খুব ভালো ডাক্তার হবে। জাতির পিতা প্রতিটি উপজেলায় ”দশ” বেডের হাসপাতাল করেছিল, সেখানেই জনগণ স্বাস্থ্য সেবা যুগোপযোগী মানের পাশাপাশি ডাক্তার তৈরি কিংবা মেডিকেল ছাত্র/ছাত্রীরা চিকিৎসা পদ্ধতিতে নিজস্ব মননশীলতা বৃদ্ধি করতে পারবে বলেই তাকে নির্মাণ করেছিল। কিন্তু জাতির পিতা আজ নেই, তার স্বপ্ন তো জননেত্রী শেখ হাসিনার চিন্তা চেতনায় রয়েছে।
জাতির পিতার স্বপ্ন পুরনে ইতিমধ্যে রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে। আর একটি সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রস্তুাবও পার্লামেন্টে পাশও হয়েছে। তাছাড়াও বাঁকি “পাঁচটি” বিভাগেরও ‘মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ হাতে নিয়েছে।আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ক্ষমতায় এলে সে গুলোর কাজ শুরু করবে। স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশিও ছাত্র ছাত্রীদের সুশিক্ষার প্লাটফর্ম সৃষ্টি হবে। নওগা, নীলফামারি, মাগুরায় “মেডিকেল কলেজ” করাও হচ্ছে। চাঁদপুরেও একটি “মেডিকেল কলেজ” করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা কিংবা চিকিৎসার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে অনেক আধুনিক এক সেবা ও শিক্ষা উন্নয়নের সেন্টার অব এক্সসিলেন্স। চিকিৎসার সহিত শিক্ষা, মেধা বৃত্তি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ সহ শিক্ষকদের গবেষণাতেও সমগ্র বিশ্ব থেকেই সহায়তা পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী “শেখ হাসিনা” বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে উন্নয়ন এবং গবেষণায় কোনো ধরনের বরাদ্দ ছিল না। ৯৬ সালে প্রথম থেকে বরাদ্দ দেয়ার প্ররক্রিয়া চালু হয়। সুতরাং উল্লেখ করার মতো এক উদহারণ তা হলো, এ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নেও লক্ষণীয় মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেই ‘একান্ন কোটি ডলার’ ঋণ সহায়তা পাচ্ছে, একটি সহযোগী বিশ্ব ব্যাংক থেকে। তাছাড়াও একই প্রকল্পে আরও ”এক কোটি ডলার”, গ্লোবাল ফিনান্সিং ফেসিলিটির আওতায় অনুদান সহায়তা দিচ্ছে এমন এ সংস্থাটি।সরকারের ট্রান্সফরমিং সেকেন্ডারি এডুকেশন ফর রেজাল্ট অপারেশন এর শীর্ষক একটি কর্মসূচিতেও মোট বাহান্ন কোটি মার্কিন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এই দেশের স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ হবে প্রায়- ৪ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন এই প্রকল্পটি জানুয়ারির- ২০১৮ থেকে আরম্ভ করে ডিসেম্বরের- ২০২২ সালেই বাস্তবায়ন করবে। এমন ধরণের শিক্ষা উন্নয়নে বাংলাদেশ একসময় পরিচয় দিতে গর্ববোধ করবে। আজকের তরুণ প্রজন্মকেই সামনে রেখেই যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “ডেল্টা প্ল্যান ২১০০” গ্রহণ করেছে।শিক্ষা ক্ষেত্রকে সু-বিস্তৃত করতেই সমগ্র বাংলাদেশের যেখানে স্কুল নাই এমন পরিবেশে ‘স্কুল প্রতিষ্ঠা’ ও যেখানে সরকারি কলেজ এবং স্কুল নাই, সেখানেই ‘সরকারি কলেজ’ কিংবা ‘স্কুল’ করেও দিচ্ছে। তিনশ’র কাছা কাছিই কলেজ এবং ‘ছাব্বিশ হাজার’ প্রাইমারি স্কুল সরকারি করণ করেছে। সুতরাং নতুন প্রজন্মকেই আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করাই আওয়ামী লীগ সরকারের মূললক্ষ্য। শিশুরা আগামী প্রজন্মে নান্দনিক সুশিক্ষা নিয়ে বড় হয়েই এমন এ প্রতিষ্ঠানসহ সমগ্র দেশের গুরুত্ব পূর্ণ দ্বায়িত্ব পালন করতে পারবে।
শুধু এমন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণে এই সরকার ক্ষান্ত হয়নি, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকার সে সব উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করেই চলছে। আবার এদেশে তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের মেধাবী ছেলে/মেয়েদের পড়া লেখাতেও সহযোগিতা করেছে সরকার এবং শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে তারা। কারণ সব শ্রেণীর মানুষের সহায়তায় শিক্ষার মান বৃদ্ধি করে সমাজ ও জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যেই দাঁড় হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বা ডিজিটাল বাংলাদেশ। তাই এই সামষ্টিক উন্নয়নেরই বর্তমানে এ সরকার এমন বিষয়টিকে উপলব্ধি করে উন্নয়নের সিঁড়ি হিসেবে শিক্ষাকেই বেছে নিয়েছে ও তদানুযায়ী পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। শিক্ষার নানান স্তর, পাবলিক পরীক্ষা সমূহ, পাঠ্যবই এবং পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে আরও যাবতীয় বিষয়াদিকে ব্যাপক পরিবর্তনের আওতায় নিয়ে আসছে। তাছাড়াও এনসিটিবি বা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের “এটুআই” প্রোগ্রামের দ্বারাই যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ১০৯ টি পাঠ্য পুস্তকের ই-বুক ওয়েবসাইট তৈরি করেছে। যার ফলেই আজ পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ, যে কোনো সময় জাতীয় শিক্ষাক্রম কিংবা পাঠ্য পুস্তক বোর্ডের সকল পাঠ্য পুস্তক ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। এই ই-বুক কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সেটের মাধ্যমেই তা সহজে পড়া যাচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরকে সরকারের নির্দেশে আলাদা আদেশ জারি হয়। আর সেই আদেশ জারিতে ৮ টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এসএসসি, দাখিল, আলিম পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মেধাবৃত্তি ও সাধারণ বৃত্তি দিয়ে এ সরকার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাছাড়া বাংলাদেশের “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়” গুলোতেও শিক্ষার্থীর জন্য নানা রকম বৃত্তি চালু আছে। বিভিন্ন “কোটা” ছাড়াও মেধার ভিত্তিতে ভর্তি এবং টিউশন ফির ক্ষেত্রেও ছাড় পায়। আবারও অনেক হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে এমন এই সরকারের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। দেশের বহু ধরনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক পর্যায়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের এ সরকারের আমলে অনেকেই বৃত্তি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো পরিবারের শিশুরা যেন ঠিকমতো লেখা পড়া করতে পারে সেই জন্যেই সরকার সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। দিচ্ছে বিনামূল্যে বই। গরিব এবং মেধাবীদের জন্যে একেবারে প্রাথমিক স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত তাদের “মেধা বৃত্তি” ব্যবস্থাও করেছে। তাদের মায়ের নামের অ্যাকাউন্ট করেই তাদের বৃত্তির টাকা প্রেরণ করে সরকার । শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়াকেই ঠেকাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে— উল্লেখ করে শেখ হাসিন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের জন্যে ‘১ কোটি ৪০ লাখ’ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থায় তারা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারেরও সুযোগ পাচ্ছে। তা ছাড়াও দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানো সহিত ‘মেধা বৃত্তি’ প্রদান করে শিক্ষা ক্ষেত্রে বেশি বেশি বরাদ্দ রাখার সঙ্গেই সকল কাজ করছে এই সরকার। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল তৈরি ও সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রত্যয় নিয়েই এমন সরকারের অগ্রযাত্রা।
লেখক,
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
এবার অভিনয়ে পরিচালক শিমুল সরকার
নজরুল ইসলাম তোফা:: পরিচালক শিমুল সরকার। সময়ের তরুণ জনপ্রিয় একজনবিস্তারিত পড়ুন
আজব এক ব্যক্তি কাঁচা মাছ, মাংস ও লতাপাতা খেয়ে স্বাভাবিক চলে
নজরুল ইসলাম তোফা:: জীবনে চলার পথে বহু রকম মানুষের সাথেবিস্তারিত পড়ুন