ভারতীয় গরু না আসায় রাজস্ব কম হলেও লাভবান খামারীরা
সামনে কোরবানির ঈদ। প্রবেশে কড়াকড়ির কারনে যশোর ও সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসছেনা বল্লেই চলে।সীমান্তের পশু খাটালগুলো খাঁ খাঁ করছে। ব্যাবসা মন্দা যাচ্ছে ভারত নির্ভর গরু ব্যাবসায়ীদের। ভারতীয় গরুতে সয়লাব থাকে দক্ষিননাঞ্চলের সর্ববৃহত পশুহাট সাতমাইল।
তবে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ‘খামারিদের’ পশুতে জমজমাট হয়ে উঠেছে দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ যশোরের বাগআঁচড়া ‘সাতমাইল পশুহাট’।
গরু ব্যাবসায়ীরা বলছেন, যশোরের বেনাপোল থেকে সাতক্ষীরার দেবহাটা পর্যন্ত সীমান্তের ইছামতি নদীর অংশটুকু বাদে বেশিরভাগ স্থানজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া। রয়েছে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ নজরদারি। ফলে এই সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে আসা এখন কঠিন।
গরু আনার পর যশোর ও সাতক্ষীরা সীমান্তে পশু খাটালে গরুগুলো রাখা হয়। বর্তমানে গরু না আসায় খাটাল গুলো গরিশুন্য। ‘নাভারণ ও সোনাবাড়ীয়া পশুশুল্ক করিডোরে’ এসব পশুর ভ্যাট আদায় করা হয়।
শুল্কবিভাগের নাভারন পশু শুল্ক করিডোরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, গত বছর প্রতিদিন গড়ে ১৭০টির মত গরু বাংলাদেশে আসলেও এবার সে সংখ্যা ৩৫ এ দাড়িয়েছে তবে ঈদকে সামনে রেখে তা আরো কমে ২০/২২ এ দাড়িয়েছে।তিনি আরো বলেন, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা পশুর সংখ্যা সাত হাজার ৫২৬টি । এ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
অথচ গত বছর একই সময়ে ভারত থেকে ৩৫ হাজার ৬৭৮টি পশু আসে । সরকার ওই সময় এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা ৩৯ হাজার টাকার রাজস্ব আয় করেছিল।
সীমান্তের একটি সুত্র জানায় ‘আক্রমন হলেই গুলি’ বিএসএফের এমন হুশিয়ারির পর থেকে বিজিবি রয়েছে সতর্ক অবস্থায়। যে কারনে বাংলা রাখালরা আর গরু আনতে ওপার যাচ্ছেনা।এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সোহেল আহমেদ জানান, ভারত থেকে গরু তেমন আসছে না। গরু আনতে কোনো বাংলাদেশি রাখালকে ভারতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
সৈয়দ সোহেল আহমেদ বলেন, সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশী গরুর রাখালরা যাতে অবৈধভাবে ভারতে গরু আনতে না যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে বিভিন্ন যায়গায় জনসচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েক জন গরুর রাখাল বলেন, দু’দেশের শুন্যরেখায় যেখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই,সেই পথ দিয়ে কিছু গরু আসছে। অবশ্য তার সংখ্যা খুবই কম। ভারতীয় রাখালরাই সীমান্তের শুন্যরেখায় এসে গরুগুলো দিয়ে যাচ্ছে।
‘ভারতীয় গরু-ছাগল না এলেও বাগআঁচড়া সাতমাইল পশুহাটে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না’ এমনটি জানিয়ে যশোরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভবতোষ কান্তি সরকার।তিনি বলেন,জেলার প্রায় ১১ হাজার খামারে কোরবানির জন্য ৩৬ হাজার গরু ও ৩২হাজার ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। অথচ কোরবানির জন্য যশোরের চাহিদা ২৭ হাজার গরু ও ২০ হাজার ছাগল।
যশোরের বাগআঁচড়া ‘সাতমাইল পশুহাটের’ সেক্রেটারি আবু তালেব বলেন, ভারতীয় পশু বেচাবিক্রির জন্য এই হাটটি নাম করা। গত তিন বছর ধরে ভারতীয় গরু কম আসায় খামারিদের দেশি গরুতে বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে ।ঈদের প্রতিহাটে অন্তত দুই হাজার গরু বেচাবিক্রি হচ্ছে বাগআঁচড়া সাতমাইল।
২০১৮ সালের গত মে মাস জুড়ে মাত্র ২১৫টি গরু, জুন মাসে ৫২৬টি গরু ও ৫৮টি ছাগল এবং জুলাই মাসে ৯৯২টি গরু ও মাত্র ১১টি ছাগল এসেছে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার ১০টি এবং শুক্রবার ২১টি গরু ও ১৯টি ছাগল এসেছে ভারত থেকে।
স্থানিয় গরুর খামারীরা জানালেন ভারতীয় গরু না আসার কারনে তারা এবছর অনেক লাভবান হয়েছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন