বেনাপোলে ১০ মাসে ১ মন ৩ কেজি সোনা ও ২ কোটি হুন্ডির টাকা উদ্ধার
বেনাপোল চেকপোস্টে গত দশমাসে ৪৩ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ সহ অন্যান্য সংস্থা। এ ছাড়াও উদ্ধার করেছে দুই কোটি হুন্ডির টাকা।
গত সপ্তায় ৫ ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে ৮ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও বিজিবি সদস্যরা।এ নিয়ে চলতি বছরে ১০ মাসে বেনাপোলে ৪৩ কেজি সোনা আটক করেছে প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা আরো ২ কোটি হুন্ডির টাকা উদ্ধার হয়েছে।
এ সীমান্ত পথে পাচার কাজ সহজ হওয়ায় আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালানীরা বেনাপোল সীমান্তকেই বেছে নিয়েছে। এখান থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যাতায়াত ব্যবস্থাও নিরাপদ। যে কারনে চোরাচালানীরা প্রতিদিন কেজি কেজি সোনা পাচার অব্যাহত রেখেছে। গত ১০ মাসে ভারতে পাচারের সময় ৩৭২ পিস ( ৪৩ কেজি) সোনা সহ ৩৬ জন পাচারকারী আটক হয়েছে। গত ১২ ফেব্রয়ারি দৌলতপুর সীমান্তে বড় আঁচড়া গ্রামের বজলুর রহমানকে ১৪ পিস সোনার বিস্কুটসহ আটক করাহয়। ৪ মার্চ গাতীপাড়া গ্রামের টিটু বিশ্বাস ২০ পিস সোনাসহ আটক হয়। ১ এপ্রিল শামীম হোসেন এবং হোসেন আলী ১৫টি সোনার বারসহ ধরাপড়ে । ২৭ মে ২ কেজি ৩শ’ গ্রাম ওজনের ২০টি সোনার বিস্কুটসহ বড়আঁচড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান আটক হয়। ৩০ মে মনির হোসেনকে ১০ পিস সোনার বারসহ আটক করে বিজিবি। বাবুল হোসেন ১০টি সোনার বারসহ আটক হয় ৫ জুন। কৌশল বদল করেছে আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালানীরা। তারা পাসপোর্ট যাত্রীদের মাধ্যমে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে পাচার করছে সোনা। ।
সূত্র জানায়,পাসপোর্ট যাত্রীদের মাধ্যমে সোনা পাচারের সময় গত ১১ জুলাই নারায়ণগঞ্জের আবু সালামকে বেনাপোলের ওপারে ভারতের হরিদাসপুর কাস্টমস সদস্যরা ২০টি সোনার বারসহ আটক করে। যার ওজন ২ কেজি ৩শ’ গ্রাম। বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে সোনাসহ আটকের পর বেনাপোল চেকপোস্টের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। বর্হিগমন চেক পয়েন্টের স্ক্যানিং মেশিনটি দ্রুত মেরামত করে চালু করে। তার পরের দিন ১২ জুলাই বেনাপোল কাস্টমস হাউসের শুল্ক গোয়েন্দা সদস্যরা চেকপোস্ট এলাকা থেকে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী পারভেজ কে ৭টি সোনার বিস্কুটসহ আটক করে। জুতার সোলের মধ্যে লুকিয়ে এ সোনা পাচার করা হচ্ছিল।
১৪ জুলাই পাসপোর্ট যাত্রী জালাল আহমেদ সেলিমকে ৫ পিস সোনার বিস্কুটসহ চেকপোস্ট কাস্টমসএলাকা থেকে শুল্ক গোয়েন্দারা আটক করে। ১৫ জুলাই ২ কেজি ৭শ’ ৫০ গ্রাম ওজনের ১১ পিস স্বর্ণের বারসহ পাসপোর্ট যাত্রী ঢাকার ওয়ারীএলাকার রুখসানা বেগমকে শুল্ক গোয়েন্দারা আটক করে। ১৭ জুলাই ১ কেজি ২শ’ ৫০ গ্রাম ওজনের ৫ পিস সোনার বারসহ মুন্সিগঞ্জ জেলারটুঙ্গিবাড়ী থানার মৃত সামসুল হকের ছেলে সেলিমকে আটক করে কাস্টমসের সদস্যরা। ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জের হারুন আল কবির ও আরিফুল হককে ৪টি সোনার বারসহ আটক করে । ২৮ জুলাই একজন ভারতীয় ও একজন বাংলাদেশীকে ৪টি সোনার বারসহ আটক করে ভারতের পেট্রোপোল কাস্টমস সদস্যরা। ৮ আগস্ট ৪ কেজি ওজনের ৩৫ পিস সোনার বারসহ শার্শা উপজেলার নুর ইসলামের ছেলে আব্দুল মমিনকে আটক করে পুটখালীবিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। ১০ আগস্ট ১ কেজি ২শ’ গ্রাম ওজনের ১২ পিস সোনার বারসহ আশিক নামে একজনকে আটক করে বেনাপোল চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। ১৮ আগস্ট ১ কেজি ৪শ’ গ্রাম ওজনের ১৪ পিস স্বর্ণের বারসহ কদর আলী নামে একজন পাচারকারীকে আটক করে বেনাপোল সদর ক্যাম্পের সদস্যরা। ৫ অক্টোবর শরিয়তপুরের সুজন মিয়াও মাদারীপুরের জনি মিয়াকে ৮টি সোনার বারসহ আটক করে বেনাপোল কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দা সদস্যরা। ৬ অক্টোবর পাসপোর্ট যাত্রী ঢাকার কদমতলীর মিজানুর রহমান ও কুমিল্লার চান্দিনার মাহবুব আলমকে ৭ পিস সোনার বারসহ আটক করে বেনাপোল কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা। ৯ অক্টোবর পাসপোর্ট যাত্রী কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে মাইনউদ্দিনকে ১০টি সোনারসহ আটক হয়। ১০ অক্টোবর যশোর সদরের ডুমদিয়া গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে রিপনকে ১০টি সোনার বারসহ আটক করে বেনাপোল পুটখালী ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। ১৭ অক্টোবর ১৮ পিস সোনার বারসহ শ্রবননামে উত্তর ২৪ পরগনার চড়ূইগাছি এলাকার এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করে বেনাপোল আইসিপি বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। ২৯ নভেম্বর শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার নওডুবা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে ইলিয়াস ও গোপালগঞ্জ সদরের ঘোষেরচর এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে মহসিনকে ১০টি সোনার বারসহ আটক করে শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা। ১ ডিসেম্বর ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রী উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ইকবালপুর থানার খিদিরপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে নসরুল হক ও দিল্লীর উত্তম নগর এলাকার মেহেন্দার বর্মার ছেলে সঞ্জীব বর্মাকে ২০ পিস স্বণের বার সহ আটক করে শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা। ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রী ধীমান সরকার,নিতীষ সিং ও মহেষ লাল শাহকে ১৭ পিস সোনার বারসহ আটক করে কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা।সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেন ও রেজাউল ইসলামের ছেলে বিল্লাল হোসেনকে ৪ কেজি ২৮০ গ্রাম ওজনের ২৬ পিস স্বর্ণের বারসহ বেনাপোল বন্দরের সামনে থেকে আটক করে বেনাপোল ৪৯ ব্যাটালিয়নের আইসিপি বিজিবি সদস্যরা।
সীমান্তের একটি সূত্র জানায়, ফেব্রয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪৩ কেজি সোনা আটক হলেও প্রতিদিন পাসপোর্ট যাত্রী এবং চোরাচালানীদের মাধ্যমে কেজি কেজি সোনা ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা থেকে অনেক বার হাত বদল হয়ে সোনা পাচার হয় ভারতে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন