বেনাপোলে হাকর নদী দখল, তৈরী হচ্ছে নতুন ভবন
যশোরের বেনাপোলে হাকর নদী চলেগেছে এখন প্রভাবশালীদের দখলে,মাটিভরাট দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে পাকা ঘরবাড়ী। একসময় এই হাকর নদী দিয়ে ভারতের কৃঞ্চনগর থেকে নৌকায় করে বেনাপোল ও ঝিকরগাছায় আসতো মাটির তৈরী থালা বাসন ও হাড়ি পাতিল বিক্রী করতে।
সত্তর দশকের খরস্রোতা সেই হাকর নদী এখন স্মৃতি।মৃতপ্রায় নদী এখন চলে গেছে প্রভাবশালীদের দখলে। ঝিকরগাছার কপোতাক্ষ ও নাভারনের বেতনা নদীর সাথে সংযুক্ত হয়ে বেনাপোল এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাকর নদী মিশেছে ভারতের বনগাঁর ইছামতি নদীতে। সে দিনের সেই প্রবাহমান জোয়ার-ভাটার হাকর নদী আজ সম্পুর্ণ স্রোতহীন। ছাব্বিশ সালের ভূমি জরিপের রেকর্ডে হাকর নদী হিসাবে রেকর্ড ভুক্ত থাকলেও বাষট্টি সালের রেকর্ডে হাকর নদীর প্রায় ৮ মাইল এলাকা ভুমি জরিপের সাথে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজসে সরকারি সম্পত্তি ব্যাক্তিগত মালিকানায় চলে যায়। রাতারাতি যাত্রী খেয়া পারাপার ও মালামাল বোঝাই পাল তোলা নৌকা বন্ধ হয়ে যায়। চলমান নদীতে বাধ দিয়ে তৈরী করা হয় অসংখ্য পুকুর। সময় গড়িয়ে গেছে প্রভাশালীদের অনুকুলে। নদী হয়ে গেছে পুকুর। চলছে দখলের মহাৎসব, যে যেভাবে পারছে নদী দখল করে ভোগ করছে। নতুন নতুন বাড়ি ও বাড়ির সীমানা প্রাচীর তৈরী হচ্ছে মরা নদীর অংশজুড়ে। দেখার কেউ নেই।খরস্রোতা হাকর নদীতে এখন আর আগেরমত নৌকা চলেনা। স্থানীয়রা গায়ের জোরে দখল করে মাছ চাষ করে খাচ্ছে। নাভারনের বেতনা নদী দখল হয়ে গেলেও শার্শার উপজেলার পূর্ববর্তী নিবাহী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম একক প্রচেষ্টায় সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে নদীর সকল বাধ উম্মুক্ত করে দেন। সে সময় সরকারী দলের অনেক প্রভাবশালী নেতার সাথে তার বিরোধ প্রকাশ্যে রুপ নেয়। তার পরও তিনি থেমে থাকেননি। সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজন কে আটক করে জেল হাজতেও পাঠান। বেনাপোল হাকর নদী উম্মুক্ত করার জন্য সে সময় তিনি মন্ত্রানালয়ে একটি চিঠিও পাঠান। তবে তার আকস্মিক বদলীতে থেমে যায় হাকর নদী উম্মুক্ত করনের কাজ।
বেনাপোল পৌর সভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন হাকর নদী উম্মুক্ত করনের জন্য মন্ত্রনালয়ের আদেশের অপেক্ষায় আছেন বলে এ প্রতিনিধিকে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুমে ভারতের পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে শার্শা উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকার বিপরীতে ভারতের শুটিয়া এলাকায় ফারাক্কার আদলে একটি বাঁধ দিয়ে পানির নব্যতার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, অতিরিক্ত পানির চাপ এলেই ভারতীয়রা সেই বাঁধ খুলে দেয়। ফলে শার্শার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্রাবিত হয়ে পড়ে। নাভারনের বেতনা নদীর সাথে বেনাপোলের হাকর নদীর সংযোগ বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত পানির চাপে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাঠের ফসল ও বাড়ি ঘর।
বেনাপোলের হাকর নদী উম্মুক্ত করার দাবিতে স্বারকলিপি প্রদান , মানববন্ধন করেছে বেনাপোল এলাকার সাধারন মানুষ। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অল্প পানিতেই ডুবে যায় বন্দরের বিভিন্ন এলাকা। এমন কি বন্দরের শেড গুলোতেও পানি ঢুকে পাড়ে । বেনাপোল পৌরসভা সর্বোচ্চ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে একাধিক এলাকায় ড্রেন নির্মান করলেও ড্রেনের পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারিনি। দূর্গাপুর এলাকায় নির্মিত ড্রেনের মুখে একটি পুকুর ফেলে দায়িত্ব শেষ করলেও বর্ষা মৌসুমে উল্টো পুকুর থেকে পানি ড্রেনে এসে জমা হয়।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নিবার্হী অফিসার পুলক কুমিার মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বাষট্টি সালের রেকর্ডে এক শ্রেনীর স্বার্থেনেসী কিছু লোক নদীর কিছু অংশ দখল করে পুকুর ও বাড়ি ঘর বানিয়েছে। আমরা তা দখল মুক্ত করার জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছি। সিন্ধান্ত এলেই বেনাপোলের হাকর নদী উম্মুক্ত করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন