পুরুষবেশে সেলুনে কাজ করেন দুই তরুণী, ঘুনাক্ষরেও টের পান না কাস্টমাররা
ছেলেরাই সংসারের দায়িত্ব সামলাবে। মেয়েরা ঘরকন্না সামলাবে আর বাইরে গিয়ে কাজ করবে ছেলেরা। আমাদের সমাজ এখনও এই বদ্ধমূল ধারণা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। তাই হয়তো সংসার চালানোর জন্য, বাবার চিকিৎসার খরচ চালানোর জন্য ছেলে সাজতে হল দুই বোনকে। একদিন, দু’দিন নয়, টানা চার বছর ধরে ছেলে সেজে সংসার চালাচ্ছে দুই বোন। ঘটনাটি ভারতের উত্তরপ্রদেশের।
দুই বোন জ্যোতি কুমারী এবং নেহা কুমারী। জ্যোতির বয়স ১৮, নেহার বয়স ১৬। চার বছর আগে তাদের বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
উত্তরপ্রদেশের এক অখ্যাত গ্রামে জ্যোতি, নেহার বাবা ধ্রুব নারায়ণ একটি সেলুন চালাতেন। সংসারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেলুনটি বন্ধ হয়ে যায়।
ধ্রুব নারায়ণের চিকিৎসা তো দূরের কথা, সংসার চালানোও দুরূহ হয়ে উঠছিল। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই সেলুন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুই বোন। কিন্তু মুশকিল হল, এলাকার মানুষ মেয়েদের কাছে চুল ছাঁটতে মোটেই পছন্দ করেন না। তাই সেলুন খুলেও লাভের লাভ বড় বেশি হয়নি। সেই অর্থে কাস্টমার আসতো না।
শেষ পর্যন্ত দুই বোন ঠিক করে, এবার ছেলে সেজে ব্যবসা করবে তারা। যেমনি ভাবা, তেমন কাজ। নিজেদের চুল ছোট করে ছেঁটে, ছেলেদের মতো পোশাক পরে পরদিন থেকে দোকানে বসে দুই বোন। নিজেদের নতুন নামও ঠিক করে ফেলে জ্যোতি এবং নেহা। পরিচিত হয় দীপক এবং রাজ নামে।
এমনিতে গ্রামের শ’খানেক পরিবার তাদের চিনত। কিন্তু তাতে ব্যবসা করতে অসুবিধা হয়নি। কারণ, পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর বা অন্য এলাকার কেউ তাদের পরিচয় ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। এভাবে ব্যবসা করেই দৈনিক চারশো টাকার কাছাকাছি রোজগার করতো দুই বোন। এই টাকা দিয়েই চলত সংসার খরচ এবং বাবার চিকিৎসা।
শুধু তাই নয়, নিজেদের পড়াশোনাও বন্ধ করেনি জ্যোতি এবং নেহা। দুপুরে দোকান খোলার আগে নিয়মিত পড়াশোনা করত তারা। জ্যোতি ইতোমধ্যেই স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে গেছে, নেহারও পড়াশোনা চলছে। দুই তরুণীর এই অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ জানিয়ে তাদের পুরস্কৃত করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকারও।
বাবা ধ্রুব নারায়ণ বলেন, “মেয়েদের এভাবে কাজ করতে দেখে ভিতর থেকে বড্ড কষ্ট হয়। কিন্তু আমি আমার মেয়েদের জন্য গর্বিত।”
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
সেই ৩৫ বস্তা টাকা জ্বালানী বানালেন স্থানীয়রা
বগুড়ার শাহজাহানপুরে রাস্তার পাশে পাওয়া বস্তা ভর্তি কুচি কুচি করাবিস্তারিত পড়ুন
টাকার স্তূপ নিয়ে হুলুস্থুল, যুবকের কাণ্ড মুহূর্তে ভাইরাল
বগুড়ার শাজাহানপুরের জালশুকা এলাকার খাউড়া ব্রিজের পূর্ব দিকের সড়ক ওবিস্তারিত পড়ুন
বগুড়ায় রাস্তার পাশে ৩৫ বস্তা ছেঁড়া টাকা!
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা গ্রামের খাওড়া ব্রিজের কাছ থেকে ৩৫বিস্তারিত পড়ুন