ত্রিপুরায় অবসান ২৫ বছরের বাম-রাজত্ব, রাম-রাজত্বের শুরু
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী বা সিপিআই-এমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের টানা ২৫ বছরের বাম-রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ত্রিপুরাতে হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাম-রাজত্বের সূচনা ঘটতে চলেছে।
আজ শনিবার সকালে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির এগিয়ে থাকার খবর আসতে থাকে বিভিন্ন ভোট গণনাকেন্দ্র থেকে। দুপুর ১২টা নাগাদ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিজেপির নেতাকর্মীরা বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে উঠে। বিজেপি নেতৃত্ব এই জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করে ত্রিপুরাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সীমান্ত-লাগোয়া ও বাংলা ভাষাভাষি অধ্যুষিত এই রাজ্যের দখল নেওয়ার জন্য কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার যে উত্তেজনার পারদ চড়িয়েছিল তাতে আজ সুফল মিলেছে। ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ রাজনৈতিক পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছে। তার বামফ্রন্টকে ব্যাপকভাবে প্রত্যাখান করেছে।
বরাবরই এই রাজ্যে মূল নির্বাচনী লড়াইটা সিপিএম ও ভারতীয় কংগ্রেসের মধ্যে হলেও এবারই প্রথম লড়াইয়ের মূল ময়দানে আসে নরেন্দ্র মোদি আর অমিত শাহ জুটির বিজেপি। তাও একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে। এর আগে ত্রিপুরাতে কোনোদিন বিজেপির কেউ বিধানসভায় জিতেনি। এবার প্রায় ৫০ ভাগ ভোট পেতে চলেছে দলটি। আর কংগ্রেস নিজেদের অস্তিত্বই হারাতে বসেছে এই রাজ্যে।সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি ৪০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম এগিয়ে রয়েছে ১৭টি আসনে। কংগ্রেস খাতা খুলতে পারছে না বলেই মনে হচ্ছে। ৩১ আসনে জয় পেলেই বিধানসভা গঠন করা যায় এখানে। এখন পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত মানিক সরকারও জনগণের রায়ে পিছিয়ে রয়েছেন।
ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট প্রথম ক্ষমতায় আসে ১৯৭৭ সালে। ১৯৮৩ সালে দ্বিতীয়বারের মতো জয় পায় তারা। কিন্তু ১৯৮৮ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে হেরে যায় বামফ্রন্ট। যদিও পাঁচ বছর ১৯৯৩ সালে ফের ক্ষমতায় ফেরে বামেরা। তারপর থেকেই এই রাজ্যে ক্ষমতায় আছে বামফ্রন্ট। সবশেষ ২০১৩ সালের নির্বাচনে বামফ্রন্ট ৫০টি আসন পায় আর বাকি ১০টি আসন ছিল কংগ্রেসের।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ৬০ আসনের বিধানসভায় দিনভর ভোট শেষে বুথফেরত গণনায় সমানে-সমানে লড়াইয়ের আভাস দেওয়া হলেও বাস্তবে বিজেপি তার চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে।
ত্রিপুরায় মোট বিধানসভা আসন ৬০টি হলেও এবার ভোট হয়েছে ৫৯টি আসনে। চরিলাম আসনে সিপিএম প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ওই আসনটিতে ভোট হবে আগামী ১২ মার্চ।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম পিটিআই জানিয়েছে, ত্রিপুরাতে মোট ভোটার ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৩ জন। এর মধ্যে ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ৩৭৫ জন পুরুষ ও ১২ লাখ ৬৮ হাজার ২০ জন নারী ভোটার। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ১১ জন ভোটার রয়েছেন। এবার নতুন ভোটারের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮০৩ জন। এবার ভোট পড়েছে ৯১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
ট্রাম্পের হয়ে প্রচারণা চালানো মোদি’র তা ভারতের পররাষ্ট্রনীতির পরিপন্থী
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডবিস্তারিত পড়ুন
ছাত্রদলের কাউন্সিল: ৮ভোটে হেরে গেলেন কেশবপুরের সেই শ্রাবণ
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি পদে মাত্র ৮ ভোটে হেরে গেছেনবিস্তারিত পড়ুন
ছাত্রদলের নতুন সভাপতি খোকন, সম্পাদক শ্যামল
কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নতুন নেতৃত্ব পেল বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল।বিস্তারিত পড়ুন