আরো খবর....
তালায় নাশকতা মামলায় ২জনসহ গ্রেফতার-৪
তালা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে নাশকতা মামলায় ২ জনসহ নিয়মিত মামলার ৪ আসামী গ্রেফতার হয়েছে।
নাশকতা মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হল, উপজেলার বালিয়াদহ গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে মোঃ আতিয়ার রহমান মোল্লা (৩৫), দাসকাটির মৃত মোজাহার গাজীর ছেলে মোঃ লিয়াকত গাজী (৫৫), নিয়মিত মামলার আসামী বাউখোলার আলমগীর হোসেন মিঠুর ছেলে মোঃ হিরোন সরদার (২০) ও চাঁদকাঠির মোঃ মনির উদ্দীন মোড়লের ছেলে মোঃ মফিজুল মোড়ল (৩২)।
তালা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মেহেদী রাসেল জানান,থানার এসআই মোঃ কামাল হোসেন, এসআই মোঃ মিজানুর রহমান ও এএসআই মোঃ জামিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ রোববার (২ ডিসেম্বর) নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবার আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
তালায় বিচলি গাদায় অগ্নিকান্ড॥১ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন
সাতক্ষীরা তালার জিয়ালা নলতায় রাতের আঁধারে কে বা কারা একটি গরু খামারের পাশের বিচলি(গো-খাদ্য) গাদায় আগুণ লাগিয়ে দিয়েছে। এতে ৩০ হাজার বিচলি পুড়ে প্রায় ১ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে। ধারণা করা হচ্ছে,হিংসাত্বকভাবে কেউ অপকর্মটি কওে থাকতে পারে।
অভিযোগে জানা যায়,উপজেলার জিয়ালানলতা গ্রামের মৃত বাছের আলী শেখ’র ছেলে রমজান আলী শেখ’র মালিকানাধীন বাড়ির পাশের গরুর খামার সংলগ্ন ঐ বিচলি গাদায় হিংস্বাতœকভাবে কেউ আগুণ ধরিয়ে দেয়। আগুণের লেলিহান শিখা প্রকট আকার ধারণ করলে আশপাশের লোকজন গিয়ে পানি দিয়ে নেভানোর আগেই সমুদয় বিচলি পুড়ে ভস্মীভূত হয়। এতে ঐ গাদার প্রায় ৩০ হাজার বিচলি পুড়ে অন্তত ৭৬ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়।
এব্যাপারে বিচলি মালিক রমজান আলী শেখ জানান,কেউ হিংস্বাতœকভাবে অপকর্মটি করে থাকতে পারে। তিনি আরো জানান,অগ্নিকান্ডের বিষয়টি কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারলে তার খামারের ১৪ টি বিদেশী গাভীর সব গুলো পুড়ে সলিল সমাধি হয়ে অন্তত ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হত। সর্বশেষ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ঐ পরিবারে ব্যাপক আতংক বিরাজ করছে। তবে এব্যাপারে কোথাও কোন মামলা বা অভিযোগ হয়নি।
তালায় গরুর ক্ষুরা রোগে মড়ক মহামারিতে রুপ নিচ্ছে: মারা গেছে ৩০টির বেশি গরু, আতংক ছড়িয়ে পড়েছে!
সাতক্ষীরার তালায় গরুর ক্ষুরা রোগ মহামারির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অন্তত ৩০টির বেশি গরু । আক্রান্ত হয়েছে আরো দু’ শতাধিক। তৃণমূলের সাধারণ গবাদি পশু মালিকদের অভিযোগ, সরকারিভাবে পর্যাপ্ত প্রতিষেধকের অভাব,সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ভূমিকা না থাকা ও সর্বোপরি জনসচেতনতার অভাবে ক্ষুরার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে। এমন পরিস্থিতিতে গবাদি পশু খামারী থেকে শুরু করে সাধারণ গরু-ছাগল মালিকরা তাদের গবাদি পশুর ভবিষ্যত নিয়ে রীতিমত আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে রবিবার সকালে তালা উপজেলার গোপালপুর গ্রামে গেলে সেখানকার মৃত কালিপদ বিশ্বাসের বৃদ্ধা স্ত্রী আরতী রানী বিশ্বাস জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার চালাতেন তিনি। তার জার্সি গাভী থেকে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ কেজি করে দুধ পেতেন। ১০ দিন আগে হঠাৎ গাভীটির জিহবায় ঘা দেখা দেওয়ায় খাওয়া কমিয়ে দেয়। একপর্যায়ে গাভীটির জ্বর হয়। দু’পায়ের খুরে দগদগে ঘা দেখা দিলে গাভীটির চলনশক্তি কমে যায়। উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তার অফিসে যেয়ে বার বার তাগিদ দিয়েও কোন ঔষধ বা ব্যবস্থাপত্র পায়নি। উপরন্তু ৫০০ টাকা না দিলে সরকারি ডাক্তার আসেন না বলেও অভিযোগ এ ভূক্তভোগীর।
একই গ্রামের লক্ষী রানী দত্ত জানান, এক সময় তাদের গোয়ালে অনেক গরু ছিল। গরুর উপরই ছিলো তাদের জীবনযাত্রা। কালের বিবর্তনে রোগ ব্যাধিতে গরু মারা যাওয়ায় দু’টি দুগ্ধবতী গাভী ও একটি বাছুর ছিল তাদের গোয়ালে। ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার একটি গাভী মারা গেছে। অন্য গাভী ও বাছুরটির পল্লী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।
একইভাবে কলেজ ছাত্র প্রসেনজিৎ দত্ত জানান, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের দু’টি গাভী ও একটি বাছুর মারা যাওয়ার কথা। আগে ভাগে রোগ সম্পর্কে অবহিত না হওয়ায় গরু মারা গেছে বলে জানান তিনি। খুরা রোগে তার একটি গাভী মারা গেছে আক্রান্ত হয়েছে তিনটি। বাসুদেব দত্তের তিনটি গাভী মারা গেছে আক্রান্ত হয়েছে দু’টি, মোহন দত্তের একটি গাভী মারা গেছে আক্রান্ত হয়েছে দু’টি, প্রভাষ দত্তের একটি গাভী মারা গেছে, আক্রান্ত হয়েছে তিনটি, অমল পালের একটি গাভী মারা গেছে, আক্রান্ত হয়েছে দু’টি, কার্তিক নন্দীর একটি গাভী মারা গেছে আক্রান্ত হয়েছে আরো দু’টি।
মনোরঞ্জন রায়ের তিনটি গরু ও চারটি ছাগল আক্রান্ত হয়েছে, মারা গেছে একটি ছাগল। জয়দেব দে এর একটি গাভী ও গণেশ শীলের একটি গাভী মারা গেছে। তাদের আক্রান্ত হয়েছে ছয়টি গরু। এ ছাড়াও ইছহাক আলীর একটি ও নীলু নন্দীর একটি করে গাভী মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে সাতটি। দেবাশীষ বিশ্বাসের পাঁচটি ছাগল ও মলিনা বিশ্বাসের আটটি ছাগল আক্রান্ত হয়েছে।
খানপুর ঋষিপাড়ার সুবোল দাস ও মহর্ষি দাসের দু’টি করে গাভী মারা গেছে আক্রান্ত হয়েছে তাদের তিনটি গরু। জিয়ালা গ্রামের প্রশান্ত ঘোষ জানান, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে তার খামারে ছয়টি গাভী ও দু’টি বাছুর মারা গেছে। আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে সাতটি গরু। একইভাবে গত এক সপ্তাহে তিনটি বাছুর মারা যাওয়ার কথা জানাচ্ছিলেন দিবস ঘোষ। তাদের পাড়ায় এ নিয়ে কয়েক দিনে কমপক্ষে আরো ১০টি গরুর মৃত্যু ও ৩০টিরও বেশি গরু আক্রান্ত হয়েছে।
তালা সদর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ডা. শাহীনুর ইসলাম জানান, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হওয়া গবাদি পশুর মৃত্যুর সম্ভবনাই বেশি থাকে। এ রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এফএমডি’র সরকারিভাবে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় খামারীরা বাধ্য হয়ে তাদের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। সে অনুযায়ি তারা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তবে আক্রান্ত হলে খামারীদের পরিচর্যা বা সচেতনতার উপর নির্ভর করে পশুটির বেঁচে থাকা। আক্রান্ত পশুর জন্য ওজন ভেদে পেনিসিলিন ৪০ লাখ ইনজেকশান, ভিটামিন কিটোভেট ও এন্টিহিস্টামিন দেওয়া হয়ে থাকে। খামারীদের পরিচর্যার তারতম্যের কারণে আক্রান্ত গরু সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এব্যাপারে তালা উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বিশ্বাসের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তালায় সবচেয়ে বেশি গাভী পালন হয়। তবে যে পরিমাণ গাভী পালন হয় সে অনুপাতে এখানে ভ্যাকসিনের সরবরাহ নেই। চাহিদার তুলনায় ভ্যাকসিন অপ্রতুলতায় চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তারা খামারীদের জন্য বিশেষ কিছু করতে পারছেননা। তবে এখন পর্যন্ত গবাদি পশুর ক্ষুরা রোগে মড়ক মহামারির কোন আশংকা নেই। বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু গরু মারা যেতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসেবে অতি মাত্রায় ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু আমদানি ও জনসচেতনতার অভাবকে দায়ি করছেন। বিশেষ করে আমদানিকৃত গরু ভাইরাসের বাহক বলে দাবি তার। তবে বর্তমানে ভারতের সীমান্ত এলাকায় ক্ষুরা রোগের পরিস্থিতি ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে তার কোন তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন