আরো খবর...
তালায় অধ্যক্ষের দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেল
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জাতপুর টেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল্লাহ’র বিরদ্ধে অর্থ অত্মসাতসহ অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। সোমবার (২৮ মে) বেলা ১১টায় তালা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের প্রভাষক জিএম ফৈজুর রহমান।
কলেজের ভুক্তভোগি সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০১ সালে জাতপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে আসলেও কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল্লাহ’র ব্যাপক দুর্নীতির কারণে তারা মানসিক নির্যাতন ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম) পাবলিক পরীক্ষায় সেরাদেশের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করে কলেজটি। কিন্তু অধ্যক্ষের নানা চক্রান্ত ও দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
২০১৬ সালের ২৬ শে নভেম্বর এন,টি,আর,সি,এ কর্তৃক নির্বাচিত ৫ জন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। এরমধ্যে প্রভাষক (ব্যাংকিং) উৎপল কুমার সাহার এমপিওভূক্তির জন্য অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল্লাহ ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করেন। প্রভাষক উৎপল উৎকোচের উক্ত টাকা দিতে না পারায় অদ্যাবধি এমপিওভূক্তি না হয়ে মানবেতার জীবনযাপন করছে।
এছাড়া ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হলেও অধ্যক্ষের দুর্নীতির কারণে তৎকালিন সভাপতি বিলে স্বাক্ষর না করায় ২০০৭ সালের মে মাসের সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনবিল বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রায় ৬০ হাজার উক্ত বিল অধ্যক্ষ প্রদান না করলে শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক ক্ষতিগ্রস্তসহ মানবেতার জীবন যাপন করছেন। এছাড়া কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল্লাহ অদ্যাবধি ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে ফরম ফিলআপ বাবদ ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৫৭১ টাকা, ভর্তি ও রেজিষ্ট্রেশন বাবদ ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৪০৭ টাকা, প্রসংশাপত্র বিতরণ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮শত, উপবৃত্তি প্রদানের নাম করে ৪৩ হাজার ৩শত, শর্টকোচ থেকে আয়কৃত (ফেব্রুয়ারী ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত) প্রায় ৫ লাখ টাকা , জমির হারি, ফলজ,বনজ ও পুকুর লিজ বাবদ (২০০২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত) ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মিলে মোট ৩৬ লক্ষ ১৮ হাজার ৭৮ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কলেজের অফিস সহকারী হায়দার আলী মোল্যা কলেজ অধ্যক্ষের অবৈধভাবে আর্থিক দুর্নীতির কাজে সহযোগিতা না করায় কলেজের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রেখে নি¤œমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক উত্তম সরকারকে নিয়ে অর্থ অত্মসাৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও ভুয়া রশিদ বইয়ে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন তিনি। এছাড়া কলেজ গত ০৬/০৮/২০০৪ তারিখে প্রভাষক চঞ্চল রায়কে অবৈধভাবে সেক্রেটারিয়েল সায়েন্স পদে নিয়োগ প্রাদন করেন। নিয়েগের সময় প্রভাষক চঞ্চল রায়ের বয়স ছিল ৩৩ বছর যা আইন বহির্ভুত। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অধ্যক্ষ তার বয়সসীমা গোপন করে তাকে নিয়োগ প্রদান করেছেন এবং তথ্য গোপন করে আইন বর্হিভূতভাবে এডহক কমিটির মাধ্যমে টাইম স্কেল পরিবর্তন করেছেন বলে জানা গেছে। অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ দিতে না পারায় কম্পিউটার বিভাগের প্রভাষক জিএম ফৈজুর রহমানকে সিনিয়ার স্কেল প্রদানের জন্য প্রেরিত কাগজে অদ্যাবধি স্বাক্ষর করেনি। তিনি স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রভাষক জিএম ফৈজুর রহমানের অর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
এছাড়া ২০০৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে কলেজে তিন মাসের সার্টিফিকেট-ইন-কম্পিউটার সর্ট কোর্স চালু হলে অধ্যক্ষ ঐ কলেজের শিক্ষক দিদারুল ইসলামকে কোর্স প্রতি ৫ টাকা দিবে মর্মে ট্রেনার হিসাবে নিয়োগ দিলে তিনি আটটি কোর্স সম্পন্ন করে। কিন্তু তিনি তাকে ট্রেনার হিসাবে কোন টাকা প্রদান না করে সমুদয় আতœসাৎ করেন। যে কারণে শিক্ষক দিদারুল ইসলাম তার পাওনা ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা চেয়ে সিনিঃ ম্যাজিষ্ট্রেট ১ নং আদালতে সাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নং- সিআর ১৬৪/১২, টি আর ১৫/১৩। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। কলেজ গভার্নিং বডির অনুমোদন চাড়াই কলেজ অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রি, পুকুরের মাছ, ফলজ ও জমি ইজারা প্রদান করে প্রতি বৎসর প্রায় ৯০,০০০ হাজার নিজ পকেটস্থ করে থাকেন। বে-সরকারী সংস্থা উত্তরণ কর্তৃক উক্ত কলেজে ১.০১ একর দানকৃত সম্পত্তি সংলগ্ন উত্তরনের বাকি ০.৬৫ একর সম্পত্তিতে পুকুর, হ্যাচারী ও গোডাউন স্থাপনা রয়েছে। ইতপূর্বে কলেজ ও উত্তরণ এর জমির সীমানা নির্ধারণ করা না থাকায় উক্ত তফশীল জমি জবর দখল করার লক্ষে বিভিন্ন সময় উক্ত পুকুর থেকে মাছ ধরে বিক্রি করা, গোডাউন ও হ্যাচারী ক্ষতিসাধন করা, গাছপালা কেটে বিক্রি করার মত অপকর্ম কলেজ অধ্যক্ষ প্রতিনিয়ত করেই চলেছে। এ জন্য সাতক্ষীরা বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী মামলাও হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অত্র কলেজের একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম কলেজটি প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০১ সালে অত্র কলেজের নামে ১.০১ একর জমি দান করেন, যার আনুমানিক মুল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। যার দলিল নং-১৪৭৭ তারিখ-১৯/০২/২০০২ ইং। এছাড়া উক্ত জমির উপর ভবন নির্মাণসহ কলেজ উন্ন্য়নের জন্য অনুদান হিসেবে বিভিন্ন তারিখে মোট ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা প্রদান অনুদানসহ কলেজে কম্পিউটার, ল্যাবটপ, প্রিন্টার, স্কানার দিয়েছেন। যিনি কলেজ উন্নয়নে এত কিছু করলেন কলেজ অধ্যক্ষ তাকেই ষড়যন্ত্রভাবে সুকৌশলে একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা থেকে বাদ দিয়ে শামীম আখতার নামে একব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেখানো হয়েছে। অথচ শামীম আখতার ২শত ৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এফিডেভিট করে বলেছেন যে, আমি কখনও প্রতিষ্ঠাতা ছিলাম না এবং আমি উক্ত কলেজে একটি টাকা বা স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি দান করি নাই। উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলামই অত্র কলেজের একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা। যদিও শহিদুল ইসলাম দেওয়ানী আদালতে এ বিষয়ে মামলা করেছিলেন। মামলাটি নিস্পত্তিঅন্তে পুনরায় কলেজে কমিটি গঠন করা হয় এবং শহিদুল ইনলামকে একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে মনোনয়ন করে অনুমোদনের জন্য উপজেলা নির্বাহি অফিসার বোর্ডে প্রেরণ করেন। কমিটি গঠনে অধ্যক্ষ সাইফুল্লাহ’র সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় তিনি তার মামাত ভাই মাজেদ বিশ্বাসকে দিয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ১১২৫০/১৫ নং এক রীট পিটিশন দাখিল করে উক্ত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন থাকায় কারিগরি শিক্ষাবোর্ড উক্ত কমিটির অনুমোদন প্রদান করতে পারছেন না। ২০১২ সন হতে আজ পর্যন্ত দীর্ঘদিন পরিচালনা কমিটি না থাকায় অর্থ অত্মসাৎ করাসহ স্বেচ্ছাচারিতায় অত্র কলেজটির সাথে জড়িত সবাই আজ অতিষ্ঠ ও আর্থিক ক্ষতিরসম্মুখীন। কলেজটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগি শিক্ষক-কর্মচারীরা উপরোল্লিøখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করে অধ্যক্ষ সাইফুল্লাহ’র দুর্নীতির তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তালা প্রেসক্লাবে জরুরী সভা
তালা প্রেসক্লাবের এক জরুরী সভা ক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার সকালে সিনিয়র সাংবাদিক গাজী সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় তালা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী জাহিদুর রহমান, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক সব্যসাচী মজুমদার বাপ্পী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সেলিম হায়দার, দপ্তর সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু, প্রচার সম্পাদক কাজী আরিফুল হক ভুলু, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিএম গোলাম রসুল, ক্লাবের সদস্য প্রভাষক নজরুল ইসলাম, অর্জুন বিশ্বাস, খলিলুর রহমান লিথু, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, আকবর হোসেন, মোঃ নূর ইসলাম, মোঃ রবিউল ইসলাম, আজমল হোসেন জুয়েল, মোঃ তাজমুল ইসলাম, কাজী লিয়াকত হোসেন, সুমন রায় গনেশ, এস,কে রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ক্লাবের সাংগঠনিক দিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
তালায় নবজাতকের লাশ উদ্ধার
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সদরের ফালগুনী সিনেমা হলের পিছনে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ৪/৫ মাস বয়সী এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৮ মে) সকাল ১০ টার দিকে কে বা কাহারা উক্ত পুরুষ নবজাতককে ফেলে রেখে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকালে তালা সদরের পুরাতন ফালগুনী সিনেমা হলের পিছনে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কালভার্টের নিচে নবজাতকের রক্তাক্ত লাশটি পলিথিনের উপর পড়ে ছিল। তালা থানার ওসি (তদন্ত) কাজী মোঃ শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ময়না তদন্তের জন্য লাশ সাতক্ষীরা মর্গে পাঠানো হয়েছে। তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন