তদন্ত হলেও ব্যবস্থা হয়নি ৮ বছরেও
তালার এজেডিপি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সাতক্ষীরার তালার জাতপুর এজেডিপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতি ও বিধি বহির্ভূত এমপিওভূক্তিসহ বিভিন্ন সময়ে নানা দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে অবশেষে তদন্ত শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবক,ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের জমিদাতাসহ সর্বস্তরের এলাকাবাসী। এব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে ওয়েভ বাংলাদেশ,আমেরিকান সেন্টারের সদস্য বিদ্যালয়ের জমিদাতার ছেলে এস এম সালাহ উদ্দীন দূর্নীতি দমন কমিশন,শিক্ষা মন্ত্রণালয়,জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানাযায়,তালার আলাদীপুরের মৃত রিয়াজ উদ্দীন সরদারের ছেলে আঃ মজিদ সরদার ১৯৮৯ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে জাতপুর এজেডিপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরে ২০১০ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক পদ শূণ্য হলে প্রথমত ঐ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক এএইচ এম আঃ মুনিমকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে ও পরে ঐ একই বছরে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিলে অন্যান্যদের সাথে তিনিও ঐপদে আবেদন করেন। তবে তার প্রধান শিক্ষক পদে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় একাধিক তৃতীয় বিভাগ। কেননা,২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারীর পরিপত্রানুযায়ী একাধিক তৃতীয় বিভাগ নিয়ে তার চাকুরীর কোন সুযোগ ছিলনা। তাই আঃ মজিদ তার এইচএসসির সার্টিফিকেটটি দ্বিতীয় বিভাগ করতে উঠেপড়ে লাগেন। এক পর্যায়ে তার এইচ এস সির সার্টিফিকেটটি হারিয়ে গেছে বলে ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তালা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যাতে ঐ বছরের ৮ জানুয়ারী তার সার্টিফিকেটটি হারিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন। যার নং- ১১৬৯। এর আগে ২৬ জুলাই প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগে তিনি তার ঐসার্টিফিকেটটিতে ঘষা-মাজা করে তৃতীয় বিভাগের স্থলে দ্বিতীয় বিভাগ লিখে তা জমা দিয়ে নিয়োগ পান। এরপর বিষয়টি বুঝতে পেরে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিাতা এসএম মোমিনুল ইসলাম কতৃক মাউশিতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকালে মজিদ তার উপস্থাপতি
সার্টিফিকেটগুলির মধ্যে এইচএসসি ও অন্য ৩ টি সার্টিফিকেটে তৎকালীণ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দীনের সিল ও স্বাক্ষর পরষ্পর দু’রকম প্রমাণিত হয়।
সব থেকে মজার বিষয়,২০১০ সালের ২৬ জুলাই প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেও তার ৬ মাস পূর্বে ৩০ সেপ্টেম্বর তালা থানায় সার্টিফিকেট হারানো ডায়েরীতে উল্লেখ করেন যে,৮ জানুয়ারী তার সার্টিফিকেটটি হারেয়ে গেছে। তা হলে নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি কোন সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন? মূলত নিজের পছন্দমত লোকদের দিয়ে গঠিত পরিচালনা পরিষদের একটি বড় অংশকে বোকা বানিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি ঐ নিয়োগ পান। এর পর এনিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে এইচএসসির জাল সার্টিফিকেটটি আসল প্রমাণে জালিয়াতির প্রসারতাই বৃদ্ধি করেছেন। জাল সার্টিফিকেটে নিয়োগ পেলেও সুচতুর মজিদ ঐসময় দ্বিনকল উপস্থাপন করে নিজের এমপিও করাননি। নিয়োগকালীণ চুড়ান্ত ফলাফল সংকলন সীটে স্বাক্ষরের তাং ১৯/৭/১০ হলেও কম্পিউটারের অটো ল্যান্ডস্কেপে তারিখ দেখানো হয় ২৮/৯/১০। মাউশিতে দাখিলকৃত নিয়োগকালীণ প্রথম আসল সংকল সীট যার প্রমাণ বহন করে। ঐসময় মাউশি তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ ও পরে তাদের এমপিও সভায় তার এমপিও স্থগিতের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর সুপারিশ করে।
প্রসঙ্গত,বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামো নিয়োগ বিধির ধারা ১৮.১(গ)ও(ঘ) অনুযায়ী ভূয়া জাল সার্টিফিকেট প্রদানের মাধ্যমে এমপিও ভূক্তি শাস্তিযোগ্য অপরাধ ও পরবর্তীতে জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া কাগজপত্র তৈরীর বিষয়টি বাংলাদেশ দন্ডবিধি ও ফৌজদারী আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
শুধু এখানেই শেষ নয়,জনবল কাঠামোনুযায়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩ জন পিয়ন নিয়োগ উল্লেখ থাকলেও তিনি মোট ৪ জন পিয়ন নিয়োগ দিয়েছেন। যা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের রিপোর্টে মোঃ সোহরাব হোসেনকে প্যাটার্ণ অতিরিক্ত বলে উল্লেখ করে তার উত্তোলিত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরৎপূর্বক তার নিয়োগ বাতিলের উল্লেখ থাকলেও প্রধান শিক্ষক জালিয়াতির মাধ্যমে তা উত্তোলন করে আতœসাৎ করছেন। যা বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারী জনবল কাঠামো ১৭(৩)ও ১৮(১)(খ),(ঘ)এর সুস্পষ্ট লংঘন। মন্ত্রনালয়ের সর্বশেষ পরিদর্শণ ও নীরিক্ষানুযায়ী জানাযায়,২০০৬ সাল পর্যন্ত সংরক্ষিত তহবিলে ৫০ হাজার ৭শ’৬০ টাকা উল্লেখ থাকে যা বর্তমানে সংরক্ষিত তহবিলের সোনালী ব্যাংকে যে হিসাব রয়েছে তা ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারী খোলা হয়েছে। সেখানকার মূল তহবিলের পরিমাণ ৬০ হাজার ৫শ’৬০ টাকা এখানে এফডিয়ারের বাকী টাকা প্রধান শিক্ষক আতœসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলটিও নিয়মিত ব্যবহার হয়না। বর্তমানে ঐতহবিলে মাত্র ৭৫৮ টাকা রয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আঃ মজিদের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন