খুলনায় মামলা ছাড়া গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ হাইকোর্টের
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন এলাকায় সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া বিএনপির কর্মী ও সমর্থকদের গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ভোটের আগের দিন এই আদেশ এসেছে।
রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে সোমবার বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামাল এই নির্দেশ দেন।
এই নির্দেশের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া গ্রেপ্তার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের প্রতি রুলও জারি করা হয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের জন্য এখন কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা মাত্র। মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বিকার চারটা পর্যন্ত এই ভোটের দিকে মহানগরবাসীর পাশাপাশি দৃষ্টি থাকবে সারা দেশেরই।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যে পাঁচ মহানগরে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হচ্ছে তার মধ্যে প্রথম রায় দেবে খুলনার ভোটাররা। আর স্থানীয় নির্বাচন নানা কারণে জাতীয় নির্বাচনের আবহ ধারণ করেছে।
গত ২৪ এপ্রিল ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর থেকেই বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু তার সমর্থকদের ব্যাপকহারে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেন। রবিবার ভোটের প্রচারের শেষ দিন দেড়শ কর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তারের হিসাবও দেন তিনি। অবশ্য যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই বাড়ি মহানগরের সীমানার বাইরে।
পুলিশ বলছেন, সুনির্দিষ্ট মামলার আসামি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। নাশকতার মামলার আসামিরা এলাকায় ফেরায় তাদেরকে ধরা হয়েছে। ২০১৩, ১৩ ও ১৫ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নাশকতার ঘটনায় আটকদের বিরুদ্ধে মামলা ছিল।
মঞ্জুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক বিএনপির অভিযোগকে ঢালাও এবং মিথ্যাচার বলেছেন। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, বিএনপি বরাবরের মতো মিথ্যাচারের ভাঙা রেকর্ড খুলে বসেছে।
ভোটের দুই দিন রবিবার কর্মীদের গ্রেপ্তারকে অবৈধ দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ। আদালতের আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার তাদের পরাজয় নিশ্চিত জানে বলে তারা আমাদের নেতা-কর্মী সমর্থকদের উপর আক্রমণ শুরু করেছে। এরই মধ্যে চারশ পাচঁশ লোকের বেশি গ্রেপ্তার করেছে। আমাদের প্রার্থীর এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে।’ ‘এমনকি বিএনপির সাধারণ সমর্থকদেরও তাদের উপরও একইরকম নির্যাতন চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি রিট দায়ের করি।’
শুনানিতে কী বলেছেন, জানতে চাইলে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি, এই ধরনের গণগ্রেপ্তার এবং সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করা আইনের পরিপন্থী। এ বিষয়ে ব্লাস্টের করা একটা মামলায় সুপ্রিমকোর্টের একটা রায় আছে। সেই রায়ে সর্বোচ্চ আদালত কতগুলো গাইডলাইন দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কীভাবে কাকে, কোন অবস্থায় কাকে গ্রেপ্তা করা যাবে এবং গ্রেপ্তার করার আগে এবং পরে কী ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে সেটা আইন শৃংখলা বাহিনীকে সুনিদির্ষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে। কিন্তু এ নির্দেশনার কোন কিছু তোয়াক্কা না করে খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় গণগ্রেপ্তারের তাণ্ডবলীলা চলছে। এটা বন্ধ করা প্রয়োজন।’
‘আমরা আদালতে বলেছি, সুপ্রিমকোর্ট হলো দেশের উচ্চতম আদালত। এই আদালতের নির্দেশনা মানতে সকলেই বাধ্য। কেউ এর ঊর্ধ্বে নয়। যেসব আইনশৃংখলা বাহিনীর দায়িত্ব রয়েছে তারা যেন এ রায়ের পরিপন্থী কোন কিছু না করে।’
রিটে শুনানি করা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনস্বার্থে বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যানের করা এই রিটটি মূলত দলীয় স্বার্থে। কারণ তারা সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এমন একটি তথ্যও দেখাতে পারেননি।’
আদালদের আদেশের বিষয়ে সাজু বলেন, ‘উভয়পক্ষে শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার সংক্রান্ত আপিল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে খুলনায় গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে রুলও জারি করেছে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
ট্রাম্পের হয়ে প্রচারণা চালানো মোদি’র তা ভারতের পররাষ্ট্রনীতির পরিপন্থী
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডবিস্তারিত পড়ুন
ছাত্রদলের কাউন্সিল: ৮ভোটে হেরে গেলেন কেশবপুরের সেই শ্রাবণ
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি পদে মাত্র ৮ ভোটে হেরে গেছেনবিস্তারিত পড়ুন
ছাত্রদলের নতুন সভাপতি খোকন, সম্পাদক শ্যামল
কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নতুন নেতৃত্ব পেল বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল।বিস্তারিত পড়ুন