কেশবপুরে ভারী বর্ষণ: পাঁচ শত পরিবার পানিবন্দি, তিন শত হেক্টর ফসল ও দুই হাজার মৎস্য ঘের পানির নীচে
যশোরের কেশবপুর উপজেলার হরিহর ও ভদ্রা নদীর তলদেশ পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় অতিবর্ষণের পানিতে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে উঁচু স্থান ও আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাচ্ছে। গবাদী পশু ও হাস-মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ। তিন শত হেক্টর ফসল ও দুই হাজার মৎস্য ঘের পানির নীচে নিমজ্জিত রয়েছে।
জানা গেছে- কেশবপুর উপজেলার কাশিমপুরে ভদ্রা নদীতে শুকনো মৌসুমে ইতোপূর্বে ক্রসড্রাম দিয়ে পলি আটকানো হতো এবং বর্ষা মৌসুমে ঐ ক্রসড্রাম তুলে দিলে নদীতে নাব্যতা থাকত এবং নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎ কাশিমপুরে ভদ্রা নদীতে ক্রসড্রাম না দেওয়ায় ভদ্রা ও হরিহর নদীতে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত বছর কেশবপুরের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ গৃহহারা হয়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। অর্ধাহারে-অনাহারে পানিবন্দি মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করে।
শুক্রবার, শনিবার ও রবিবারের ভারী বর্ষণে কেশবপুর, মধ্যকুল, ভবানীপুর, কেশবপুর সাহাপাড়া, আলতাপোল, বালিয়াডাঙ্গা, বাজিদপুর, নেহালপুর, বগা, রেজাকাটি, মহাদেবপুর, ডহুরি, কালিচরনপুর, সাগরদত্তকাটি, বেলকাটি, রাজনগর বাকাবর্শি, রামচন্দ্রপুর, সুজাপুর, ব্যাসডাঙ্গা, কোমরপুর, মঙ্গলকোট, গেলাঘাটা, বিদ্যানন্দকাটী, নতুন মূলগ্রাম, মূলগ্রাম গ্রামে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে উঁচু স্থান ও আতœীয়ের বাড়িতে চলে যাচ্ছে। গবাদী পশু ও হাস-মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ। তিন শত হেক্টর ফসল ও দুই হাজার মৎস্য ঘের পানির নীচে নিমজ্জিত রয়েছে।
পৌরসভার সাহাপাড়ার খোকন দত্ত বাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে চলে যাওয়ার সময় তাঁর স্ত্রী স্বপ্না ঘোষ জানান, তার মেয়ে কৃষ্ণা দত্ত সন্তান সম্ভাবা। তাকে নিয়ে তিনি খুবই চিন্তার রয়েছে। সাহাপাড়ার সূর্য অধিকারী, মধ্যকুলের রুবেল শেখ, আসমা বেগম ও রবিউল ইসলামকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়। সাহাপাড়ার খ্রীষ্টান মিশনের পিছনে বসবাসকারী যোহন সিংহের স্ত্রী নিলিমা সিংহ তাঁর পোষা ২৮ টি ছাগল নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
কেশবপুরের এস এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঙ্গলকোট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঙ্গলকোট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিয়াডাঙ্গা পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়-সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে।
কেশবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা জানান, গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষনে উপজেলার ৫৫ হেক্টর আউশ ধান, ৯৭ হেক্টর বীজতলা, ৭০ হেক্টর রোপা আমন ধান ও ৬৮ হেক্টর সবজী পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার এম এম আলমগীর কবীর জানান, গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষনে উপজেলার ১ হাজার ৫ শত ২৬ টি মৎস্য ঘের ও ৭ শত ৫২ টি পুকুর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
জরুরী ভিত্তিতে উভচর মেশিন দিয়ে হরিহর ও ভদ্রা নদী খনন না করা হলে কেশবপুর উপজেলার শতাধিক বাড়িতে জলাবদ্ধতার আশংকা দেখা দিয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন