কেশবপুরে খালের মুখে নির্মিত পাকা গেট অপসারণ, জনমনে স্বস্তি
যশোরের কেশবপুরে ভ্রাম্যমান আদালতে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে সরকারি খালের মুখে নির্মিত পাকা গেটট অপসারণ করা হয়েছে। যার ফলে ঐ এলাকার ৭/৮ গ্রামের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জানা গেছে, উপজেলার মহাদেবপুর পূর্ব বিলে সরকারি খালের মুখে পাকা গেট দিয়ে পনি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে মাছের ঘের করেছে এক মৎস্য ব্যবসায়ী। ফলে প্রতি বছর বিল পাড়ের ৫ গ্রামের দেড় হাজার বিঘা জমির ফসলহানিসহ শতাধিক বাড়ি পনিবন্দি হয়ে পড়ছে। এ নিয়ে এলাকার চাষীরা ফুসে উঠেছেন। পানিবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেতে এলাকার শতাধিক লোকের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ের সচিবসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর, মোমিনপুর, আড়ংপাড়াসহ ৭/৮ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি মহাদেবপুর খাল ও বগার খাল দিয়ে নিষ্কাশিত হতো। ২০১৫ সালে কেশবপুর পৌর এলাকার বায়সা গ্রামের মিনার হোসেন ওই বিলে মাছের ঘের করেন । এ সময় তিনি এলাকার প্রভাবশালীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে চাষীদের ইরি মৌসুমে বোরো আবাদ করার আশ্বাস দিয়ে মাত্র বিঘাপ্রতি ৩ হাজার টাকায় জমি হারি নিয়ে ওই বিলের ১ হাজার বিঘা জমি ডিড করে নেন। তিনি ঘেরের বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় সরকারি রাস্তা বেঁড়ি হিসেবে ব্যবহারসহ একটি সরকারি খাল ভরাট ও অপর একটি সরকারি খালের মুখে পাকা গেট করে অবৈধভাবে এলাকার ১০০ বিঘা ৩ ফসলি উঁচু জমি ও ক্ষুদ্র মাছ চাষীদের ১৫ টি টপ ঘের জবর দখল করে মাছ চাষ শুরু করেন। সেই থেকে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে ওই ঘেরের বাইরের দেড় হাজার বিঘা জমিসহ চারপাশের শতাধিক পরিবার প্রতি বছর পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে এলাকার ৪/৫ গ্রামের মানুষ মারা গেলে তাদের দাফনেরও কোন ব্যবস্থা থাকে না। এসব ঘটনায় গত বছর এলাকাবাসির পক্ষে শেখ কামাল হোসেন বাদি হয়ে যশোর বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই ঘের মালিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এছাড়া মহাদেবপুর আরবিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সুভাষ দাস বিদ্যালয়ের মাঠ ওই ঘের মালিকের কাছে ইজারা দিয়ে প্রতি বছর ১০/১২ হাজার টাকা করে আতœসাৎ করছেন। এ নিয়ে ওই এলাকার চাষীদের সাথে ঘের মালিকের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। যে কারণে এলাকার মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, এসএম ফজর আলী, আব্দুল হান্নানসহ শতাধিক লোকের স্বাক্ষরিত গণপিটিশনটি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও কেশবপুরের সংসদ ইসমাত আরা সাদেক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঘের মালিক মোঃ মিনার হোসেন বলেন, ডিডের শর্ত ভঙ্গ করে ওই বিলে কোন ঘের করা হচ্ছে না। তাছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রেখেই ঘের করা হয়েছে। হাসানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর জুলমাত আলী বলেন, ওই ঘের মালিক সরকারি খালের মুখে পাকা গেট করে পানি বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সাইফুর রহমান সরেজমিন তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার মোঃ কবীর হোসেনকে দায়িত্ব প্রদান করেন। মঙ্গলবার তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে রিপোর্ট দেন। বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম সাইফুর রহমান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার মোঃ কবীর হোসেনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত উক্ত গেইট অপসারণ করেন। এসময় হাসানপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক জুলমাত আলী উপস্থিত ছিলেন। এলাকাবাসি স্বর্তস্ফুর্তভাবে গেইট অপসারণ কাজে অংশ গ্রহণ করেন। পরে ভ্রাম্যমান আদালত ৩টি খালের বাঁধ ও পাটা অপসারণ করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
সেই ৩৫ বস্তা টাকা জ্বালানী বানালেন স্থানীয়রা
বগুড়ার শাহজাহানপুরে রাস্তার পাশে পাওয়া বস্তা ভর্তি কুচি কুচি করাবিস্তারিত পড়ুন
টাকার স্তূপ নিয়ে হুলুস্থুল, যুবকের কাণ্ড মুহূর্তে ভাইরাল
বগুড়ার শাজাহানপুরের জালশুকা এলাকার খাউড়া ব্রিজের পূর্ব দিকের সড়ক ওবিস্তারিত পড়ুন
বগুড়ায় রাস্তার পাশে ৩৫ বস্তা ছেঁড়া টাকা!
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা গ্রামের খাওড়া ব্রিজের কাছ থেকে ৩৫বিস্তারিত পড়ুন