কম খরচে দার্জিলিং ট্যুর
দার্জিলিং ভ্রমণ অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো বিষয়। কিন্তু অর্থ সঙ্কটে সেটা বাস্তবে পরিণত হয় না বেশিরভাগ মানুষের। কিন্তু পরিকল্পনাটা একটু যুৎসই ভাবে সাজালেই আপনি কম খরচে ঘুরে আসতে পারেন দার্জিলিং-এ।
গত ডিসেম্বরে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম ডুয়ার্স আর দার্জিলিং। ভ্রমণ শেষে খরচের হিসেব করে দেখলাম, পাঁচদিনে মোট খরচ হয়েছে জনপ্রতি ১২,০০০ টাকা! ডুয়ার্স-দার্জিলিংয়ের যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া আর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো এ টাকাতেই সম্ভব হয়েছে। এই গল্পে অন্য কোনো কিছুর বর্ণনা বাদ দিয়ে শুধু পুরো ট্রিপের খরচের গল্পটা বলি। কোথায়, কীভাবে কত খরচ করেছি আমরা।
ঢাকা থেকে নন এসি বাসে জনপ্রতি ৬৫০ টাকা বাস ভাড়া দিয়ে পৌঁছলাম বুড়িমারি বন্দর। বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বেলা শেষ হয়ে যাওয়ায় কোনো ঝুঁকি না নিয়ে একটি জীপ নিলাম ১,৫০০ রুপী দিয়ে। পরিবার প্রতি ৫০০ টাকা পড়লো ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি অরণ্যে পৌঁছাতে।লাটাগুড়ির নির্জন অরণ্যে পৌঁছাতে প্রায় রাত হয়ে গিয়েছিল আমাদের। সঙ্গে ছোট বাচ্চা আর নারী থাকার কারণে সোনার বাংলা রিসোর্টের এক রুমেই উঠতে হয়েছিল সেদিন। ভাড়া পড়েছিল ১,৮০০ রুপী। মানে প্রতি পরিবারের ৬০০ রুপী। এরপর দিন থেকেই বাজেট আমাদের ধারণার চেয়ে কমতে শুরু করলো।
লাটাগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং যাবার দুটি উপায় ২,৫০০-৩,০০০ টাকার জীপ ভাড়া করে প্রথমে শিলিগুড়ি। তারপর জীপে ১,৬০০ অথবা জনপ্রতি ১৫০ রুপী করে দার্জিলিং। দ্বিতীয় উপায় হলো লাটাগুড়ি স্টেশন থেকে ২০ রুপীর টিকেট কেটে, ডুয়ার্সের অরণ্যের রূপ দেখতে দেখতে শিলিগুড়ি স্টেশন। তারপর দার্জিলিং রিজার্ভ বা শেয়ার জীপে। আমরা দ্বিতীয়টা বেছে নেয়ায় পরিবার প্রতি খরচ বেঁচে গিয়েছিল ১,০০০ টাকা করে।
দার্জিলিংয়ে প্রথম দিনের রুম ভাড়া ছিল ১,০০০ রুপি করে, আর দ্বিতীয় দিন চমৎকার হোটেলে খোলা বারান্দাসহ রুম ভাড়া ১,৩০০ রুপি। দার্জিলিং থেকে কালিম্পং হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত একটি জীপ পেয়েছিলাম ৩,৫০০ রুপিতে।শিলিগুড়িতে ভালো মানের ডাবল রুম পেয়েছিলাম ৯০০ রুপিতে। আর একদিন থেকে সকালে ৩,০০০-৩,৫০০ টাকায় জীপ রিজার্ভ না করে একটু সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম! ৬০ টাকা করে সরকারী বাসে উঠে চ্যাংড়াবান্দা বাইপাস পর্যন্ত এসে, ৩০ টাকা করে টোটো ভাড়া দিয়ে বর্ডারে। বর্ডার পার হয়ে ৬০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে ঢাকায়।
এই হলো যাওয়া-আসা, থাকা-বেড়ানোর খরচ। এবার আসা যাক খাবারের খরচে। ঢাকা থেকে রাতের বাসে ওঠাতে রাতের খাবারটা বাসা থেকেই খেয়ে বাসে ওঠা গেছে। সকালে রংপুরে নাস্তা জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং দুপুরে ১০০ টাকা করে বুড়ির হোটেলে খাওয়া। রাতে লাটাগুড়ি বাজারে অমলেট আর পরাটা ৪০ রুপী করে জন প্রতি আর বাচ্চাদের জন্য ৮০ রুপীর চিকেন বিরিয়ানি, সঙ্গে সবার জন্য লিমকা। পরিবার প্রতি সকাল-দুপুর আর রাতে খরচ হয়েছিল ৬০০ টাকার মতো।
দার্জিলিংয়ে সব সময় খাবার জন্য আমার পছন্দ মসজিদের গলিতে অবস্থিত ইসলামিয়া হোটেল। ভাত আর মাংস খাওয়া যায় জনপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আমাদের প্রতি বেলায় পরিবার প্রতি খরচ হয়েছিল ২৫-৪৫ টাকা করে গড়ে ৩০০ টাকা। দুই দিনের শুধু দার্জিলিংয়ে ৪০০ টাকা আর অন্যান্য খাবার নিয়ে মিলিয়ে মোট খরচ হয়েছিল ৬০০ টাকা। দুই দিনে গড়ে ১,০০০ টাকা।এ হলো আমাদের সর্বশেষ ডুয়ার্স-দার্জিলিং ভ্রমণের অবাক করা খরচ, যেটা আমাদের নির্ধারিত বাজেটের চেয়েও কম। মাত্র ১২,০০০ টাকায় পুরো পরিবারের ৫ দিনের ডুয়ার্স-দার্জিলিং ভ্রমণের খতিয়ান।
সুতরাং ভারতের যে কোনো জায়গা ভ্রমণে যদি রিজার্ভ জীপ না নিয়ে ওদের ষ্টেট ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন আর থাকার ক্ষেত্রে রুম শেয়ার করার মানসিকতা থাকে তাহলে খরচ অনেক কমে যায়। পাশাপাশি আমরা আরো যেটা করে থাকি, সকালে ভালো করে নাস্তা করি, দুপুরে ভাত বা ভারী খাবার খেয়ে সময় নষ্ট না করে শুকনো খাবার খেয়ে সারাদিন ঘুরে-ফিরে সন্ধ্যা বা রাতে ভালো করে ডিনার করে রুমে ফিরি। তাতে করে সময় বাঁচে আর বাঁচে খরচও।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
এবার অভিনয়ে পরিচালক শিমুল সরকার
নজরুল ইসলাম তোফা:: পরিচালক শিমুল সরকার। সময়ের তরুণ জনপ্রিয় একজনবিস্তারিত পড়ুন
সালমানকে উৎসর্গ করে গাইলেন টুটুল
জনপ্রিয় রেডিও উপস্থাপক জহিরুল ইসলাম টুটুল শ্রোতা মহলে আরজে টুটুলবিস্তারিত পড়ুন
সন্তানকে নিয়ে নিউইয়র্কের পথে পথে তাহসান-মিথিলা
সন্তানকে নিয়ে নিউ ইয়র্কের পথে পথে তাহসান-মিথিলা। বিচ্ছেদ হলেও তাহসান-মিথিলাবিস্তারিত পড়ুন