আশাশুনিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পটি সংরক্ষণের দাবী
সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার হেতাইলবুনিয়া (কাজলনগর) ৭১’র বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় উক্ত গ্রামের সুধীর চন্দ্র মন্ডল ও অধীর চন্দ্র মন্ডলের দ্বিতল ভবনটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আশাশুনি থানা সদর থেকে দুরবর্তী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ছিল নিরাপদ।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী জানান- ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে অবস্থান করত। মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং, থাকা, খাওয়া ও অস্ত্রের ঘাটি হিসাবে ব্যবহৃত হত এ ক্যাম্পটি। মুক্তিযোদ্ধারা সকল ট্রেনিং নিয়ে খানসেনা ও রাজাকারদের সাথে আশাশুনির, কেয়ারগাতি, গোয়ালডাঙ্গা, চাপড়া, খুলনা সোনাডাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশ নিয়ে শত্রুদের পরাস্ত করে। গোয়ালডাঙ্গা সম্মুখযুদ্ধ ও কেয়ারগাতি যুদ্ধে রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, আমিন উদ্দীন, আবুল হোসেন, মোজ্জামেল হক শহীদ হন।
সাবেক আশাশুনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হান্নান বলেন- হেতাইলবুনিয়া ক্যাম্পটি পরবর্তীতে সম্মুখযুদ্ধে নিহত শহীদ কাজল স্বরণে নামে নামকরণ হয় কাজলনগর নামে। এই ক্যাম্পটি নেতৃত্বদেন মৃত রহমত উল্লা দাদুভাই (বীরপ্রতিক), শামছুল আবেদীন (অব: মেজর), শেখ কমরুজ্জামান, সম বাবর আলী, মৃত রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের আহবানে মুক্তির সংগ্রামে নেমেছিল সকল মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় হেতাইলবুনিয়া গ্রামের নিরঞ্জন মন্ডল, রঘুনাথ মন্ডলসহ সকলেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল।
মহান যুক্তিযুদ্ধের অনন্য স্মৃতিবিজড়িত এই ক্যাম্পটি। কিন্তু সেটি এখন বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে অস্থায়ী এই ক্যাম্পটির দ্বিতীয় তলার ছাদ ও দেয়ালে ধরেছে ফাটল। বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ও দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জলন্ত দৃষ্টান্ত হেতাইলবুনিয়া (কাজলনগর) মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পটি সংস্কারের দাবী করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও বাসীন্দারা।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই ক্যাম্পটিতে জড়িয়ে আছে অনেক জীবন বিপন্নকারী মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক দু:খময়স্মৃতি ইতিকথা, সর্বশেষ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের হাসি। কিন্তু বর্তমানে এই অস্থায়ী ক্যাম্পটি অবস্থা খুবই শোচনীয় জরাজীর্ন। ফাটল ধরেছে সকল দেয়াল ও ছাদে। যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহনকারী স্মৃতির অতল গহবরে হারিয়ে যাওয়া বাড়ীটি বর্তমান বসবাসকারীরা ও দাবী করেন স্মৃতি সংরক্ষণের।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান- আমি কাজলনগর মুক্তিযোদ্ধার ক্যাম্পটি বেহাল দশার কথা শুনে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হান্নানকে ক্যাম্পে পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। দ্রুত এর স্মৃতিসংরক্ষণ ও সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
আশাশুনিতে পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অভিযোগ!
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন করে অধিক লাভ ওবিস্তারিত পড়ুন