হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা
আশাশুনিতে পাঞ্জেরী’র গাইড বই পাঠ্যসূচীতে অর্ন্তভূক্ত করার অভিযোগ
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে আশাশুনিতে অনুমোদন বিহীন পাঞ্জেরী প্রকাশনীর গাইড বই এবং অক্ষরপত্র প্রকাশনীর গ্রামার ও ব্যাকারন বই আবারও পাঠ্যসুচীতে অর্ন্তভূক্ত করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। আর এর বিনিময়ে বই প্রকাশনীর নিকট থেকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলছেন এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চিঠি দিয়ে আগেও সতর্ক করা হয়েছে এবং আবারো সতর্ক করা হবে।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের মে মাসের আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা প্রশাসনের নির্দেশ জেলা শিক্ষা অফিসের জেশিঅ/২০১৮/৬৪০৪ নং স্মারক মোতাবেক মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করে রচিত নিন্মমানের গাইড বই (বিশেষ করে পাঞ্জেরী, অক্ষরপত্র, স্কয়ার, অক্সফোর্ড প্রকাশনীর) বই বাজারজাত না করে শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে আশাশুনিতে আবারও এই বই বাজারজাত করছেন।
জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর আশাশুনির একটি হাইস্কুলে অধিকাংশ সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে শিক্ষকদের একটি সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির বই পাঠ্য করতে পাঞ্জেরী পাবলিকেশনের সাথে চুক্তি বদ্ধ হন। এই পাবলিকেশনেরই বই হলো অক্ষরপত্র। পাঞ্জেরী পাবলিকেশনের কাভার পৃষ্টা পাল্টানো অক্ষরপত্র বই ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির বই বাংলা গ্রামার নান্দনিক বাংলা ব্যাকরণ, যার লেখক মমিনুল মোমেন, আমিরুল ইসলাম এবং ইংরেজি গ্রামার লেখক জামাল হোসেন ও স্বপন বড়ুয়া। বইটি বাজারজাত করছেন কালিগঞ্জ উপজেলার শেখ আনজারুল ইসলামের মালিকানাধীন মর্ডান বুক ডিপো। তবে, তিনি জানান, শুধু তার প্রতিষ্ঠান নয়, সাতক্ষীরা শহরের আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও এই বই বাজারজাত করছেন।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে গত ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে জেশিঅ/সাত/২০১৮/৬৮১৯ স্বারক মোতাবেক এনসিটিবি কর্তৃক অনুমোদনবিহীন নোট/গাইড বই মজুদ, বিক্রি বা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত না করতে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে এই সংক্রান্ত বই যাতে শিক্ষকরা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত না করতে পারে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে অনুমোদন বিহীন পাঞ্জেরী প্রকাশনীর বই জোরপূর্বক পাঠ্যসুচিতে অন্তর্ভূক্ত করছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় শিক্ষক সমিতি। এর বিনিময়ে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর এই বই পাঠ্য সূচিতে অন্তর্ভূক্ত না করতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দাবী জানিয়েছেন এবং জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অনুমোদন বিহীন এসব বই যারা পাঠ্যসুচিতে অর্ন্তভুক্ত করেছেন তাদের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন সচেতন অভিবাবক মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশাশুনি উপজেলার এক বইয়ের দোকানদার জানান, আশাশুনি উপজেলার গাবতলা, স্বরাপপুর, বড়দল, গোয়ালডাঙ্গা, খাজরা, কামালকাটি, পুইজালা, শ্রীউলা, গুনাকরকাটি, কাদাকাটি ও কুন্দড়িয়াসহ উপজেলা অধিকাংশ হাইস্কুলে অনুমোদনহীন পাঞ্জেরী গাইড এবং অক্ষরপত্র প্রকাশনীর গ্রামার ও ব্যাকরন বই তাদের পাঠ্য সূচিতে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আশাশুনি উপজেলার গাবতলা, স্বরাপপুর ও কুন্দড়িয়াসহ কয়েকটি হাইস্কুলের পাঠ্যসূচিতে পাঞ্জেরী প্রকাশনীর গাইড বই এবং অক্ষরপত্র প্রকাশনীর গ্রামার ও ব্যাকারন বইয়ের এর নামসহ সিলোবাস শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাড়া হয়েছিল। পরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অরুন কুমার গাইন এ বিষয়ে তাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানার জন্য অনুরোধ জানান।
আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আপাতত পাঠ্যসুচি ছাড়া বন্ধ করা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বাকী বিল্লাহ জানান- আমি ছুটিতে আছি। এসেই এ ব্যাপরে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস.এম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান- এ ধরনের বই যদি কোন প্রতিষ্ঠান তাদের পাঠ্যসূচিতে অর্ন্তভুক্ত করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরো জানান- এ ব্যাপারে বুধবার আবারও সতর্ক মূলক আরেকটি নোটিশ ছাড়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
আশাশুনিতে পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অভিযোগ!
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন করে অধিক লাভ ওবিস্তারিত পড়ুন